পাতা:বিশ্বকোষ ষোড়শ খণ্ড.djvu/৩৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজসাহী বাঙ্গালায় আর কাছারও দেখা যায় না । ক্রিয়াবান ব্রাহ্মণের অভাব দেখিয় তিনি বারাণসীধামেই ৩৮• জন ব্রাহ্মণ আনাইয়া প্রতিষ্ঠা করেন এবং তাহদের গ্রত্যেকের বসবাসের জন্য e • ৬০ হাজার টাকা ব্যয় করিয়াছিলেন । কাশীর প্রসিদ্ধ দুর্গাবাড়ী এই রাণী ভবানীর কীৰ্ত্তি। তাছার সমুদয় সংকীৰ্ত্তির পরিচয় দেওয়া এখানে অসম্ভব । রাণী ভবানীর মত তাহার কস্তা তারাও বিছুৰী, বুদ্ধিমতী, ও অসামান্ত রূপলাবণ্যবতী ছিলেন। পতির মৃত্যুর পর হইতে তিনিও ব্রহ্মচৰ্য্য অবলম্বন করেন। তাহার রূপের পরিচয় শুনিয়া সিরাজউদ্দৌলা তাহাকে পাইবার আশা করিয়াছিলেন। রাণী ভবানী সিরাজের কবল হক্টতে কস্তাকে রক্ষা করিবার জহ মহম্মদপুরে রাখিয়া দিয়াছিলেন। চারিদিকে গড়বেষ্টিত রাজা সীতারামের রাজধানী দুর্গম ছিল। মহম্মদপুরে রামসীতার বাড়ীতে তারাঠাকুরাণী থাকিতেন। সেই তারাঠাকুরাণীর নিতৃত নিবাস এখন নাটোর বড় তরফের নাএবের কাছারী বলিয়। পরিচিত । রাণী ভবানীর সময়েই সাঁতাত্তরে মম্বস্তুর হয়। এ সময়ে নাটোরের অন্নপূর্ণ রাণী ভবানী আপনার বিপুল রাজকোয শুষ্ঠ করিয়া লক্ষ লক্ষ প্রজার অন্নকষ্টনিবারণে মুক্তহস্ত হইয়াছিলেন । সেই মম্বস্তুরের হাহাকারে দয়াময়ী দেব প্রতিমা ভবানীর হৃদয় ভাঙ্গিয়া গিয়াছিল ; তাহার উপর ওয়ারেন হেষ্টিংসের দুর্ঘ্যবহার, দেশে শিল্পবাণিজ্যের অৰনতি, নিজ প্রভুত্বের থৰ্ব্বত এই সকল লক্ষ্য করিয়া তিনি নিজ দত্তকপুত্র রামকৃষ্ণের হস্তে রাজ্যভার দিয়া গঙ্গাবাস করিলেন । যে দিন রাণী ভবানী রাজ্য ছাড়িলেন, বলিতে কি সেই দিন হইতেই যেন রাজশাহীর গৌরবও নষ্ট হইতে চলিল । মহারাজ রামকৃষ্ণ পিতার দ্যায় পরম ধাৰ্ম্মিক ও নিষ্ঠাবান ছিলেন ; অনেক সময় তিনি দেবাৰ্চনায় অতিবাহিত করিতেন, নিয়ত জপ-তপে তাহার হৃদয়ে বিষয়বৈরাগ্য উপস্থিত হইল । তিনি বিষয় সম্পত্তি কিছুই দেখিতেন না। অর্থগৃং কৰ্ম্মচারিগণ একপ্রকার সর্বস্ব লুণ্ঠন কয়িতে আরস্ত করিল। তাহান্তে ক্রমেই কোম্পানীর রাজস্ব বাকী পড়িতে লাগিল। প্রবঞ্চকদিগের কথায় ভুলিয়া কাদিহাট পরগণা নড়াইলের কালীশঙ্কর রায়কে বিক্রয় করিলেন। ১৭৯৯ খৃষ্টাব্দে যশোরের কালেক্টরীভুক্ত হাবেলী, মকিমপুর, নলিবশাহী, সাতোর ও নলদী পরগণ নিলামে বিক্রয় হইল। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় নাটোরের উপর অত্যধিক রাজস্ব ধার্ঘ্য হয় । একে রামকৃষ্ণের বিষয়ে নিম্পূহত, তাছার উপর রাজস্ববৃদ্ধি, এই সকল কারণে উপযুক্ত খাজনা আদায় না হওয়াতে স্বৰ্য্যাস্ত নিলামে তাহার বহু সম্পত্তি XVI ?Ökr [ ৩৮৯ ] রাজসাহী বিক্রয় হইয়া যায়। এই সময় তাহার দেওয়ান ও পরে ইজারদীর নড়াইলের কালীশঙ্কর রায় বহু সম্পত্তি ক্রয় করেন। ময়মনসিংহের চৌধুরী, গোবরডাঙ্গার মুখোপাধ্যায় এবং কালীশঙ্কর ও গোপীমোহন ঠাকুর ও তাহার কোন কোন পরগণ খরিদ করিয়া লইয়াছিলেন । এইরূপে যোগী রামকৃষ্ণের সময়ে বহু সম্পত্তি হস্তচু্যত হইয়া সামান্ত অংশই অবশিষ্ট রহিল । মহারাজ রামকৃষ্ণ এইরূপে অধিকাংশ সম্পত্তি হারাইয়াও কিছুমাত্র দুঃখিত হন নাই ; বরং তাহার বিষয়বন্ধন শিথিল হইতে দেখিয়া তিনি সৰ্ব্বদাই আনন্দ প্রকাশ করিতেন। মহাযোগী রামকৃষ্ণ নিশীপ সময়ে শ্মশানে বসিয়া তান্ত্রিক সাধনা করিতেন। ভবানীপুরে তাহার ষজ্ঞকুও, তপোবন ও পঞ্চমুণ্ডী অস্কাপি বিদ্যমান। নাটোররাজবাটী মধ্যে ও বকসরেও তাছার তপস্ত স্থান দৃষ্ট হয়। তিনি বিশ্বনাথ ও শিবনাথ এই দুই পুত্র রাখিয় ইহলোক পরিত্যাগ করেন। মহারাজ রামকৃষ্ণের সময় অধিকাংশ নষ্ট হইলেও তখন দেবত্র সম্পত্তি কিছুই নষ্ট হয় নাই । জ্যেষ্ঠ বিশ্বনাথ অবশিষ্ট পিতৃরাজ্য এবং শিবনাথ দেবত্র সম্পত্তি পাষ্টয় সেবাইত রাজা হইলেন। এইরূপে জ্যেষ্ঠ হইতে বড় তরফ ও কনিষ্ঠ হইতে ছোট ভরফের স্বষ্টি হইল । নাটোর-রাজবংশ এতদিন শাক্ত ছিলেন। রাজা বিশ্বনাথ তাহার দুই পত্নীসহ বৈষ্ণবধৰ্ম্ম গ্রহণ করেন। কিন্তু তাছার ৩য় পত্নী রাণী জয়মণি শাক্তমত পরিত্যাগ করিতে অসম্মত হইয়া মুর্শিদাবাদে গিয়া বাস করেন। বিশ্বনাথেরও পুত্র জন্মে নাই, তাহার ইচ্ছানুসারে বড় রাণী কৃষ্ণমণি ১৮১৪ খৃষ্টাবে গোবিন্দচন্দ্রকে দত্তক লয়েন, পরে ছোট রাণী জয়মণিও এক দত্তকপুত্র গ্রহণ করেন । ১৮৩৬ খৃষ্টাব্দে অল্পদিন রাজ্যভোগ করিয়া গোবিন্দচন্দ্র ইহলীলা শেষ করেন। তাছার মৃত্যুর পর রাণী কৃষ্ণমণি বিষয়ের কর্তৃত্ব পান। তাহার সময় নাটোর রাজ্যের অনেকটা সুবিধা ছিল । গোবিনচক্রের ইচ্ছামত তৎপত্নী রাণী শিবেশ্বরী গোবিন নাথকে দত্তক লইলেন। রাজা গোবিন্দনাথ বিনয়ী ও লম্রস্বভাব হইলেও তাহার রাজ্যপ্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে মাতাপুত্রে মনস্তির ঘটে । তাছাতে রাণী শিৰেশ্বরী দত্তক অসিদ্ধ করিবার জন্য মোকদম উপস্থিত করেন। ইহাতেও উভয় পক্ষের যথেষ্ট ক্ষতি হইয়াছিল। যাহা হউক, বিলাতে মোকদম নিম্পত্তির পুৰ্ব্বে গোবিন্দনাথের মৃত্যু হয়। র্তাহার অনুমতি অনুসারে জগদিন্দ্রনাথকে দত্তক গ্রহণ করেন। মহারাজ জগদিন্দ্রনাথ একপ্লন উচ্চশিক্ষিত কৃতবিদ্য ব্যক্তি। ইনি