পাতা:বিশ্বকোষ ষোড়শ খণ্ড.djvu/৪৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামকৃষ্ণদেব [ 88° J রামকৃষ্ণদেব রুষ্ণোপাসনার সময় কথন গোপিকা ও কখন শ্ৰীমতার ভাবে অবস্থিতি করিতেন । এইরূপে এ প্রদেশের প্রচলিত প্রাচীন সমুদয় ধৰ্ম্ম ভাবসাপনের প্রক্রিয়াকুসারে গমন করিয়৷ রামtং নিমাৎ, বৌদ্ধ, নানক পন্থী, প্রভৃতি সম্প্রদায় বিশেষে মিলিত হন ও পুৰ্ব্বন্ধপ তিন দিন করিয়া সাধন করিয়াছিলেন। অত্যাশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, তিন দিন অতীত হইবা মাত্র অtয় এক সম্প্রদায়ের একজন সিদ্ধপুরুষ আসিয়া উপস্থিত হইতেন । যখন প্রকাগু মতের কার্য্যাদি সম্পূর্ণ হষ্টয়া আসিল, তখন গুপ্ত মতের সাধনায় প্রবৃত্ত হইলেন। এই সময়ে পূৰ্ব্বমত সিদ্ধপুরুষের আসিয়া উপস্থিত হইতে লাগিলেন এবং তাহদের দ্বারা উপদিষ্ট হইয়। তিনদিনের হিসাবে তৎসমুদয় পন্থাগুলির চরমভাব আয়ত্ত্ব করিয়া লইচোন । န္တီး হিন্দুমতের প্রকাগু এবং অপ্রকাশু মত গুলির নিদান নিরূপণান স্তর তিনি মহম্মদীয় ধৰ্ম্মে দীক্ষিত হইতে ইচ্ছা করিলেন। ভাবময়ের এই অভিনব ভাব মানসক্ষেত্রে অঙ্কিত হইব:মার গোবিন্দদাস নামক জনৈক ব্যক্তি সহসা তাহার নিকট সমাগত হঠয়া মুসলমানধৰ্ম্মে দীক্ষা প্রদান করিল। তাহার এই সাধনায় ও তিনদিবসের অধিক সময় প্রয়োজন झ ध्र नौशे । মুসলমান-ধর্মের সাধনার সময় তিনি ঠিক মুসলমানদিগের ন্যায় বস্ত্র পরিধান করিতেন, মস্তকে টুপি দিতেন এবং ভূলিয়া ও কালী দুর্গ কিংবা রাধা কৃষ্ণ কোন দেবদেবীর নাম উচ্চারণ করেন নাই । তৎপরে খৃষ্টধৰ্ম্মসাধনায় তাছার বাসন জন্মে। এই সময়ে এদেশে আর কোন সিদ্ধপুরুষ আসেন নাই । তিনি একদিন অপরাহ্র কালে যদুলtল মল্লিকের উদ্যানে মেরীর ক্রেীড়শায়ী বালক যীশু খৃষ্টর ছবি দেখিয়া ভাবে বিভোর হন এব: যীশুর বিমল জ্যোতিঃ লাভে পুলকিত দেহ হইয়া সেই ভাব প্রকাশ করিতে থাকেন। ঐ সময়ে তিনি গির্জা দেখিতেন, অমনি যেন গির্জার মধ্যে বসিয়া আছেন, এইরূঃ তন্ময় ভাবে তিন ; সৰ্ব্ব প্রকার বৈধ ধৰ্ম্মসাধনান্তে তিনি ; ব্রাহ্মদিগের সহিত দিন কয়েক আলাপ করিয়াছিলেন । তিনি : প্রথমে আদি ব্রাহ্মসমাজের আচার্য প্রবর দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর | মহাশয়, তদনস্থর ভারতবর্ষী ব্রাহ্মসমাজের নেতা কেশবচন্দ্র । দিন যাপন করেন । সেন এব’ পরিশেষে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের গোস্বামী ও শান্ত্রি মহাশয় দিগের সহিত মাননা করিয়াছিলেন । রামকৃষ্ণদেবের বিশেষ শিক্ষা এই যে, আপনার মধ্যে সীমা বিশিষ্ট জ্ঞান রাখিয়া সৰ্ব্বত্র একাকার বোধ করিতে পারিলে বিবাদ মিটিয়া যায়। অর্থাৎ আপন ভাল বজায় থাকিবে এবং সেই ভাব এক অদ্বিতীয় ভাবময়ের বুঝিয়া লইতে হইবে। যেমন সকলকে এক প্রভুর ভৃত্যজ্ঞান, এক রাজার প্রজাজ্ঞান থাকিলে মনিব বা রাজার ভ্রম হয় না, মনিব বা রাজ; লইয়া পরস্পর বিবাদ হয় না, সেইরূপ এক অদ্বিতীয় পরমেশ্বর সকলেরই উপাস্ত বলিয়া বোধ হইলে বিবাদ মিটিয়া যায়। রামকৃষ্ণদেব এই আধ্যাত্মক তত্ত্ব প্রকটিঙ করিবার নিমিত্ব অবতীর্ণ হইয়াছিলেন বলিয়া তাহার শিষ্য ও ভক্তবৃন্দের বিশ্বাস । সৰ্ব্বপ্রথমে এক ব্রাহ্মণী রামকৃষ্ণকে অবতার বলিয়া প্রকাশ করেন। রামকৃষ্ণদেবের সাধনাবস্থায় এই স্ত্রীঙ্গে কটি আসিয়া উপস্থিত হন। তাহাকে দেখিয় রামকৃষ্ণদেব অতিশয় আনন্দিত হইয়াছিলেন। ব্রাহ্মণী এ দেশের বাঙ্গালী স্ত্রীলোকের স্থায় ছিলেন। তিনি কাহার স্ত্রী কাহার কন্যা, কোথায় নিবাস ইহা কেহ জানিত না । পুরাণ, তন্ত্র এবং যাবতীয় গুপ্ত সাধনাদি র্তাহার আয়ত্ত ছিল । তিনি রামকৃষ্ণের সাধনকাধ্যে সহায়তা করিতেন। ব্রাহ্মণীর সহিত রামকৃষ্ণের গোপাল ভাল ছিল । তিনি কখন কথন যশোদার দ্যায় বেশ ভূষা করিয়৷ অন্যান্ত স্ত্রীলোকের সহিত রূপার থালায় ক্ষীর সর লইয়া তাহার নিজের বিরচিত গোপাল বিষয়ক গীত গান করিতে করিতে রামকৃষ্ণের গৃহাভিমুখে গমন করিতেন। গৃহের নিকটস্থ হইলামাত্র প্রায় তিনি মুচ্ছিত হইতেন। তখন তাহার শ্রবণবিবরে গোপাল নাম উচ্চারণ না করিলে কখন সংজ্ঞা হইত না। কালীর সম্মুখে বলিদান হইলে সেই রুধিরের শরায় ছাগশোণিতাক্ত রম্ভাদি তিনিই আপনি ভক্ষণ করিয়া ফেলিতেন । ব্রাহ্মণীকে কালীর স্বরূপ বলিয়া অনেকের ধারণা ছিল । রামকৃষ্ণদেবের নিকট তিনি ক্রমান্বয়ে একাদশ বৎসর অবস্থিতি করিয়াছিলেন । এই ব্রাহ্মণী যখন রামকৃষ্ণদেবকে অবতার বলিয়া প্রচার করেন, মথুর বাবু তাঙ্গ বুঝিবার নিমিত্ত কলিকাতা হইত্তে পণ্ডিত বৈষ্ণবচরণকে একদিন দক্ষিণেশ্বরে লইয়। যান । সেই সময়ে এদেশের অদ্বিতীয় দিগ বিজয়ী গৌরী নামক পণ্ডিত মহাশয় উপস্থিত ছিলেন। বৈষ্ণবচরণকে দেখিয়ামাত্র রামকৃষ্ণদেব ভাবাবেশে দেীড়াঙ্গয়া গিয় তাহার স্বন্ধোপরি আরোহণ করেন। বৈষ্ণবচরণ রামকৃষ্ণদেবের অপুৰ্ব্ব মহা“ভাবের লক্ষণপরম্পরা • অবলোকনপুৰ্ব্বক ভগবৎ-সম্ভাষণে কৃতাঞ্জলি হইয়। স্তব করিতে আরম্ভ করিলেন । তিনি ও গোরী ব্রাহ্মণীর কথা অমুমোদনপুৰ্ব্বক রামকৃষ্ণদেৱকে অবতার বলিয়। সাব্যস্ত করিয়াছিলেন ।