পাতা:বিশ্বকোষ সপ্তদশ খণ্ড.djvu/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লঙ্কা [ ১৪৬ ] লঙ্কা এই পুরী ছাড়িয়া দিবার জন্য কুবেরের নিকট এক দূত প্রেরণ করেন। কুবের রাবণের ভয়ে ঐ পুরী ত্যাগ করিয়া যাইলে রাবণ লঙ্কার অধীশ্বর হন। ( রামায়ণ উত্তরকা- ) ,” { রাবণ দেখ। ] “উপনিৰেশ শৰে লঙ্কায় বর্তমান অবস্থিতি নিরূপণ করিবার জন্ত ধৰকিঞ্চিৎ প্রমাণপ্রয়োগ উদ্ভূত করা হইয়াছে। রামচন্দ্র কপিসৈন্ত সঙ্গে লইয়া গীতা উদ্ধারের জন্ত লঙ্কায় গমন করিয়াছিলেন। সেই লঙ্কা কোথায় ? তাহার বর্তমান নাম কি ? সেই লঙ্কাপুরীর উৎপত্তি এবং তাহার প্রাচীন ও আধুনিক ইতিহাস সম্বন্ধে নিয়ে যথাসম্ভব প্রমাণ উদ্ভূত হইল – বর্তমান দেশীয় ও বিদেশীয় ভৌগোলিকগণ একবাক্যে বলেন, এখন যাহাকে আমরা সিংহল বা সিলোন বলি, তাহারই প্রাচীন নাম লঙ্কা। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত সঙ্গত বলিয়া বোধ হয় না । অতি পূৰ্ব্বকাল হইতেই আমাদের পুরাণাদি-শাস্ত্রকারগণ লঙ্কা ও সিংহলকে দুই স্বতন্ত্র দ্বীপ ললিয়াই জানিতেন। মহাভারত ও পুরাণাদিতে তাহা বিশেষভাবে বর্ণিত আছে। “সিংহলান বর্বরান্‌ মেচ্ছা যে চ লঙ্কানিবাসিনঃ।” রত বন ৫১ অঃ, ২২ শ্লো” । “লঙ্কা কালাজিনাশ্চৈব শৈলিকা নিকটাস্তথা ॥ ২০ ঋবজ্ঞা: সিংহলাশ্চৈব তথা কাঞ্চীনিবাসিনঃ ॥” ২৭ মার্কণ্ডেয়পুরাণ ৫৮ অধ্যায়। এতদ্ভিন্ন ভাগবত ৪ । ১৯ । ৩০, বৃহৎসংহিতা, ১৪ । ১৫, প্রভৃতি প্রাচীন গ্রন্থে লঙ্কা ও সিংহল দুইট স্বতন্ত্র দ্বীপ বলিয়াই উল্লিখিত হইয়াছে। রামায়ণে দক্ষিণদেশীয় স্থানাদির উল্লেথকালে লিখিত আছে— মলয় পৰ্ব্বতের পরে তাম্রপণী নদী, এই নদী সাগরে মিলিত হইয়াছে। এই নদী উত্তীর্ণ হইয়া পাও্যনগর, এই নগরের পুরষ্কার সুবর্ণনিৰ্ম্মিত। পরে সাগরের নিকটে উপস্থিত হইবে, সমুদ্র পার হইয়৷ সাগরের মধ্যে অগস্ত্যনিবেশিত মহেন্দ্ৰ পৰ্ব্বত দেখিতে পাইবে । অপর পারে শতযোজন-বিস্তৃত অতিশয় প্রভাযুক্ত একটি দ্বীপ আছে, এইখানে রাবণ বাস করে। سميه ناية মলয়ন্ত মহোঁজসঃ ॥ দ্রুক্ষ্যথাদিত্যসঙ্কাশমগস্ত্যমৃষিলত্তমম্। ততস্তেনাভ্যমুজ্ঞাতাঃ প্রসমেন মহাত্মলা ॥ उड्भिर्नैः क्षींश्टेी उद्विषां भशनौम्। স। চন্দনবনৈশ্চিত্ৰৈঃ প্রচ্ছন্নদ্বীপধারিণী ॥ কাম্ভেব যুবতী কান্তং সমুদ্রমবগাহতে । ভতে হেমময়ং দ্বিষাং মুক্তামণিবিভূষিতম্। 導 豪 যুক্তং কপাটং পাণ্ড্যানাং গত প্ৰক্ষ্যৰ্থ বানরাঃ । ততঃ সমুদ্রমাসাপ্ত সম্প্রধাৰ্যার্থনিশ্চয়ম্ ॥ অগস্ত্যেনাস্তরে তত্ৰ সাগরে ধিনিবেশিতঃ । চিত্রসাস্থনগঃ শ্ৰীমা মহেশ্রঃ পৰ্ব্বতোত্তমঃ ॥ জাতরূপময়ঃ শ্ৰীমান অবগাঢ়ো মহার্ণবম্। দ্বীপগুস্তাপরে পারে শতযোজনবিস্তৃতঃ ॥ তত্ৰ সৰ্ব্বাত্মনা সীতা মার্গিতব্য বিশেষতঃ । তে হি দেশাস্তু বধ্যস্ত রাবণন্ত দুরাত্মনঃ।” কিষ্কিন্ধ্যাকাও ৪১ সঃ । ১৫—২৫ শ্লোঃ । মলয় পৰ্ব্বতের বর্তমান নাম পশ্চিমঘাট, এই পৰ্ব্বতের যে স্থান হইতে তাম্রপণী উৎপন্ন হইয়াছে, সেই স্থানকে এখনও wortfä on 1 (Caldwell's Dravidian Grammar, Intro.p.48 ) তাম্রপণা নদী তিনবেল্লী প্রদেশের মধ্য দিয়া সাগরে মিলিত হইয়াছে। এই নদীর তীরে সমুদ্রের নিকটে বে পাও্যনগর স্থাপিত ছিল, তাহাকে প্রাচীন আরব্য ও গ্রীক ভৌগোলিকগণ ‘কোলকে’ ও ‘কোএল এবং নিকটস্থ সাগরকে কোলকিকস্ + বলিতেন। সমুদ্র পার হইয়া মহেন্দ্ৰ পৰ্ব্বত । ইহাই সিংহল দ্বীপের বর্তমান মহিন্তল পৰ্ব্বত বলিয়া বোধ হয় । যে সময়ের কথা লেখা হইতেছে, বোধ হয় তৎকালে তাম্রপণী নদীপ্রবাহিত ভূমিথও দক্ষিণাংশে আরও অনেকটা বিস্তৃত ছিল । এই নদী অতিক্রম করিয়াই সিংহলদ্বীপে যাইতে হইত, এজন্ত সিংহলদ্বীপকে পৌরাণিককালে তাম্রপর্ণ বলিত । গ্রীসের প্রাচীন পুরাবিদগণ বলেন, পাও্যনগর মুক্ত আহরণ জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। কিন্তু মহাভারতের মতে, সিংহলদ্বীপে লোকে মুক্ত আহরণ করিত । রাজস্থয়-যজ্ঞকালে সিংহলদ্বীপের লোকেরাই রাজা যুধিষ্ঠিরকে মুক্ত উপহার পাঠাইয়াছিলেন। “সমুদ্রসারং বৈদুৰ্য্যং মুক্তাসঙ্ঘাস্তথৈব চ। শতশশ্চ কুথাংস্তত্র সিংহলাঃ সমুপাহরন ।” সভাপর্ব ৫১ ৷৷ ৩৬ । রামায়ণেই আবার অপর স্থানে লিখিত আছে, হনুমানাদি বানরগণ সীতাম্বেষণ করিতে করিতে দক্ষিণদেশ অতিক্রম করিয়া এক অজ্ঞাতপুৰ্ব্ব পর্বতগহ্বরে উপস্থিত হয়। এই স্থানের নাম ঋক্ষবিল। ইহার চারিদিকেই টুর্গম পৰ্ব্বতশ্রেণী। বানরগণ এইস্থানে আসিয়া ক্লাস্ত ও পথভ্রান্ত হইল। (তাহারা পূৰ্ব্বে সুগ্ৰীবের নিকট শুনিয়াছিল, মহেন্দ্ৰ পৰ্ব্বতের পরে, সমুদ্রের পরপারে রাবণনিৰাস লঙ্কাদ্বীপ ; কিন্তু এই স্থানের বিষয় তাহারা পূৰ্ব্বে কখন অবগত হয় নাই।) অনেক অনুসন্ধান করিতে • কোলক্ষিক সাগরের বর্তমান নাম মায়ার উপসাগর। ( Lassen.)