পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-চতুর্থ সংস্করণ.pdf/১২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূলোক 〉 o> সেইখানেই আলো হোত । ছায়া ব’লে কিছুই থাকত না । তীব্র আলোর ঠিক পাশেই থাকত ঘোর অন্ধকার । গাছের মাথার উপর রোদর উঠত চোখ রাঙিয়ে আর তার তলা তোত মিশমিশে কালো, ঘরের ছাদে বা কী করত তুই পহরের রোদের তেজ, ঘরের ভিতর থাকত দুই পহরের অমাবস্তার রাত্রি । প্রদীপ জ্বালার কথা চিন্তা করাই হোত মিথ্যে, কেননা পৃথিবীর বাতাসে অক্সিজেন গ্যাসের সাহায্যেই সব কিছু জ্বলে । গাছের সবুজ পাতায় থাকে গোলাকার অণুপদার্থ, তাদের মধ্যে ক্লোরোফিল ব’লে একটা পদার্থ আছে—তা’রাই সূর্যের অালো জমা করে রাখে গাছের নানা বস্তুতে । তাদের শক্তিতেই তৈরি হচ্ছে ফলে ফসলে আমাদের খাদ্য, আর গাছের ডালেতে গুড়ির কাঠ । পৃথিবীর বাতাসে আছে অঙ্গারাক্সিজেনী গ্যাস সামান্ত পরিমাণে । উদ্ভিদবস্তুতে যত অঙ্গার পদার্থ আছে, যার থেকে কয়লা হয় সমস্ত এই গ্যাস থেকে নেওয়া । এই অক্সিজেনী আঙ্গারিক গ্যাস মানুষের দেহে কেবল যে কাজে লাগে না তা নয়, এ’কে শরীর থেকে বের করে দিতে না পারলে আমরা মারা পড়ি । কিন্তু গাছ আপন ক্লোরোফিলের যোগে এই আঙ্গারিকে জলে মিশিয়ে ধানে গমে আমাদের জন্য যে খাবার বানিয়ে তোলে, সেই খাদ্যের ভিতর দিয়ে সূর্যতাপের শক্তিকে আমরা প্রাণের কাজে লাগাতে পারি। এই শক্তিকে আকাশ থেকে নেবার ক্ষমতা আমাদের নেই, গাছের আছে । গাছের থেকে আমরা নিই