পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-চতুর্থ সংস্করণ.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8や বিশ্ব-পরিচয় অগ্নিকাণ্ডের অনেক খবর মেলে যা আর কোনো উপায়ে পাওয়া যায় না । সাদ আলো ভাগ করতে পারলে তার বর্ণসপ্তকের একদিকে পাওয়া যায় লাল অন্যদিকে বেগনি—এই দুই সীমাকে ছাড়িয়ে চলেছে যে আলো সে আমাদের চোখে পড়ে না । ঘন নীলরঙের আলোর ঢেউয়ের পরিমাপ এক ইঞ্চির দেড়কোটি ভাগের এক ভাগ। অর্থাৎ এই আলোর রঙে যে ঢেউ খেলে তার একটা ঢেউয়ের চূড়া থেকে পরবর্তী ঢেউয়ের চুড়ার মাপ এই । লাল রঙের আলোর ঢেউ ঠিক এর দ্বিগুণ লম্বা। একটা তপ্ত লোহার জ্বলন্ত লাল আলো যখন ক্রমেই নিভে আসে, আর দেখা যায় না, তখনও আরো বড়ো মাপের অদৃশ্ব আলো তার থেকে ঢেউ দিয়ে উঠতে থাকে। আমাদের দৃষ্টিকে সে যদি জাগিয়ে তুলতে পারত তাহলে সেই লাল-উজানি রঙের আলোয় আমরা নিভে-আসা লোহাকে দেখতে পেতুম, তাহলে গরমি কালের সন্ধ্যাবেলার অন্ধকারে রৌদ্র মিলিয়ে গেলেও লাল-উজানি আলোয় গ্রীষ্মতপ্ত পুথিবী আমাদের কাছে আভাসিত হয়ে দেখা দিত । একান্ত অন্ধকার ব’লে কিছুই নেই। যাদের আমরা দেখতে পাইনে তাদেরও আলো আছে। নক্ষত্ৰলোকের বাহিরের নিবিড় কালে অভ্যাকাশেও অনবরত নানাবিধ কিরণ বিকীর্ণ হচ্ছে । এই সকল অদৃশ্ব দূতকেও দৃশ্যপটে তুলে তাদের কাছ থেকে গোপন অস্তিত্বের খবর আদায় করতে পারছি এই বর্ণলিপিযুক্ত দূরবীন ফোটোগ্রাফের সাহায্যে ।