পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-চতুর্থ সংস্করণ.pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নক্ষত্ৰলোক & $ নয় সব কিছুই টানে সব-কিছুকে । যার মধ্যে যতটা আছে বস্তু, তার টানবার জোর ততটা । তাছাড়া দূরত্বের কম বেশিতে এই টানের জোরও বাড়ে কমে। দূরত্ব দ্বিগুণ বাড়ে যদি, টান কমে যায় চারগুণ, চারগুণ বাড়লে টান কমবে ষোলোগুণ। এ না হোলে সূর্যের টানে পৃথিবীর যা কিছু সম্বল সব লুঠ হয়ে যেত। এই টানাটানির পালোয়ানিতে কাছের জিনিসের পরে পৃথিবীর জিত রয়ে গেল। মু্যটনের মৃত্যুর বছর সত্তর পরে আর একজন ইংরেজ বিজ্ঞানী লর্ড ক্যাভেণ্ডিশ র্তার পরখ করবার ঘরে দুটো লোহার গোলা ঝুলিয়ে প্রত্যক্ষ দেখিয়ে দিয়েছেন তা’রা ঠিক নিয়ম মেনেই পরস্পরকে টানছে । এই নিয়মের হিসাবটি বাচিয়ে আমিও এই লেখার টেবিলে বসে সব কিছুকেই টানছি। পৃথিবীকে, চন্দ্রকে, সূর্যকে, বিশ্বে যত তারা আছে তার প্রত্যেকটাকেই, যে পিপড়েটা এসেছে আমার ঘরের কোণে আহারের খোজে তাকেও টানছি, সেও দূর থেকে দিচ্ছে আমায় টান, বল বাহুল্য আমাকে বিশেষ ব্যস্ত করতে পারেনি। অামার টানে ওরও তেমন ভাবনার কারণ ঘটল না । পুথিবী এই অঁাকড়ে ধরার জোরে অসুবিধা ঘটিয়েছে অনেক । চলতে গেলে পা তোলার দরকার। কিন্তু পৃথিবী টানে তাকে নিচের দিকে ; দূরে যেতে হাপিয়ে পড়ি সময়ও লাগে বিস্তর। এই টেনে রাখার ব্যবস্থা গাছ পালার পক্ষে খুবই ভালো । কিন্তু মানুষের পক্ষে একেবারেই নয় । তাই জন্মকাল থেকে মৃত্যুকাল পর্যন্ত এই টানের সঙ্গে মানুষকে লড়াই ক’রে চলতে