পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভূলোক

 সূর্যকিরণ ছাড়া আরো অনেক কালাপাহাড় দূর থেকে আসে বাতাসকে অদৃশ্য গদাঘাত যেমন উল্কা, তাদের কথা পূর্বেই বলা হয়েছে। এরা ছুটে আসে গ্রহআকাশের ভিতর দিয়ে এক সেকেণ্ডে দশ থেকে একশো মাইল বেগে। হাওয়ার ঘর্ষণে তাদের মধ্যে তাপ জেগে ওঠে, তার মাত্রা হয় তিন হাজার থেকে সাত হাজার ফারেনহাইট ডিগ্রি পর্যন্ত; তাতে করে বেগনি-পারের আলোর তীক্ষ্ণ বাণ তূণমুক্ত হয়ে আসে, বাতাসের অণুগুলোর গায়ে পড়ে তাদের জ্বালিয়ে চুরমার করে দেয়। এছাড়া আর এক রশ্মিবর্ষণের কথা পূর্বেই বলা হয়েছে। সে কমিক রশ্মি। বিশ্বে সেই হচ্ছে সবচেয়ে প্রবল শক্তির বাহন।

 পৃথিবীর বাতাসে আছে অক্সিজেন নাইট্রোজেন প্রভৃতি গ্যাসের কোটি কোটি অণুকণা, তারা অতি দ্রুতবেগে ক্রমাগতই ঘোরাঘুরি করছে, পরস্পরের মধ্যে সংঘাত চলছেই। যারা হালকা কণা তাদের দৌড় বেশি। সমগ্র দলের যে বেগ তার চেয়ে স্বতন্ত্র ছুটকো অণুর বেগ অনেক বেশি। সেইজন্যে পৃথিবীর বাহির-আঙিনার সীমা থেকে হাইড্রোজেনের খুচরো অণু প্রায়ই পৃথিবীর টান কাটিয়ে বাইরে দৌড় দিচ্ছে। কিন্তু দলের বাইরে অক্সিজেন নাইট্রোজেনের অণুকণার গতি কখনো ধৈর্যহারা পলাতকার বেগ পায় না। সেই কারণে পৃথিবীর বাতাসে তাদের দৈন্য

১০৯