পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরমাণুলোক

উদ্ভাবন হচ্ছে ঠিক সেই সময়টাতেই বিশ্বের সূক্ষ্মতম পদার্থের অলক্ষ্যতম মর্ম বিদীর্ণ করবার জন্যে বিরাট বৈদ্যুত-বর্ষণীর কারখানা বসল।

 পূর্বেই বলেছি আলফা-কণা স্বরূপ হারিয়ে হয়ে যায় হেলিয়ন গ্যাস। এটা কাজে লেগেছে পৃথিবীর বয়স প্রমাণ করতে। কোনো পাহাড়ের একখানা পাথরের মধ্যে যদি বিশেষ পরিমাণ হেলিয়ম গ্যাস দেখা যায়, তাহলে এই গ্যাসের পরিণতির নির্দিষ্ট সময় হিসাব করে ঐ পাহাড়ের জন্মকুষ্টি তৈরি করা যায়। এই প্রণালীর ভিতর দিয়ে পৃথিবীর বয়স বিচার করা হয়েছে।

 হাইড্রোজেন-গ্যাসের ঠিক উপরের কোঠাতেই পড়ে যে গ্যাস তারই নাম দেওয়া হয়েছে হেলিয়ম। এই গ্যাস বিজ্ঞানীমহলে নূতন-জানা। এই গ্যাস প্রথম ধরা পড়েছিল সূর্যগ্রহণের সময়ে। সূর্য আপন চক্রসীমাটুকু ছাড়িয়ে বহুলক্ষ ক্রোশ দূর পর্যন্ত জ্বলাস্পের অতি সূক্ষ্ম উত্তরীয় উড়িয়ে থাকে; ঝরনা যেমন জলকণায় কুয়াশা ছড়ায় আপনার চারিদিকে। গ্রহণের সময় সেই তার চারদিকের আগ্নেয় গ্যাসের বিস্তার দেখতে পাওয়া যায় দুরবীনে। এই দূরবিক্ষিপ্ত গ্যাসের দীপ্তিকে য়ুরোপীয় ভাষায় বলে করোনা, বাংলায় একে বলা যেতে পারে কিরীটিকা।

 কিছুকাল আগে ১৯৩৭ খ্রীস্টাব্দের সূর্যগ্রহণের সুযোগে এই

৩৩