পাতা:বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়
২৫

 আমাদের দেশে মাতৃভাষায় একদা যখন শিক্ষার আসন প্রতিষ্ঠার প্রথম প্রস্তাব ওঠে তখন অধিকাংশ ইংরেজিজানা বিদ্বান আতঙ্কিত হয়ে উঠেছিলেন। সমস্ত দেশের সামান্য যে-কয়জন লোক ইংরেজি ভাষাটাকে কোনোমতে ব্যবহার করবার সুযোগ পাচ্চে তাদের ভাগে উক্ত ভাষার অধিকারে পাছে লেশমাত্র কম্‌তি ঘটে এই ছিল তাঁদের ভয়। হায়রে, দরিদ্রের আকাঙ্ক্ষাও দরিদ্র।

 এ কথা মানতে হবে জাপান স্বাধীন দেশ। সেখানকার লোক বিদ্যার যে মূল্য স্থির করেছে সে মূল্য পূরো পরিমাণে মিটিয়ে দিতে কৃপণতা করেনি। (আর হতভাগা আমরা পুলিস ও ফৌজ বিভাগের ভূরিভোজনের ভুক্ত-শেষ রাজস্বের উচ্ছিষ্টকণা খুঁটে তারি দামে বিদ্যার ঠাট কোনোমতে বজায় রাখচি ফাঁকা মাল-মসলায়।) আমাদের কাঁথার ছিদ্র ঢাকতে হয় ছেঁড়া কাপড়ের তালি দিয়ে। তাতে গৌরব নেই, কেবল কিছু পরিমাণে লজ্জা নিবারণ ঘটে, লোক-দেখানো মান রক্ষা হয়, জীর্ণতা সত্ত্বেও আবরণটা থাকে।

 এটা সত্য কথা। কিন্তু আক্ষেপ করে যখন কোনোই ফল নেই তখন এর দোহাই দিয়ে নিজের চেষ্টাকে খর্ব্ব করলে চলবে না; তুফান উঠেচে বলেই হাল আরো শক্ত করেই ধরতে হবে। যে বিদ্যাকে এতদিন আমরা বিদেশের নিলামে সস্তায় কেনা ভাঙা বেঞ্চিতে বসিয়ে