পাতা:বিশ্বভারতী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্বভারতী

চিন্তা এই সময় শান্তিনিকেতন পত্রে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হইতে থাকে— বিশ্বভারতী প্রসঙ্গে ইহার কোনো কোনো রচনা অংশতঃ উদ্ধৃত হইল—

 ‘আমাদের দেশে বর্তমানে দুই রকমের ভীরুতা দেখা যায়। কাহারও ভীরুতা দেশী প্রকৃতিকে রক্ষা করিতে; কাহারও ভীরুতা য়ুরোপীয় শিক্ষা গ্রহণ করিতে। যাঁহারা এই দুই ভীরুতাকেই অতিক্রম করিয়াছেন তাঁহারাই ভারতবর্ষকে বাঁচাইবেন। মৈসুরের রাজাসন এই দুই ভয়কেই ছাড়াইয়া উঠিয়াছে।

 ‘এইজন্যই যখন মৈসুরের নৃতন বিশ্ববিদ্যালয় দেখিলাম সেটা এতই বেসুরা বোধ হইল। ইহার মধ্যে আমাদের আপন কিছুই নাই, ইহা একেবারেই নকল। ইহাতেই বুঝিলাম, বিদ্যা সম্বন্ধে ভারতবর্ষ আপন সাহস একেবারেই হারাইয়া ফেলিয়াছে। যে বিদ্যালয়কে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় বলিয়া থাকি তাহার মধ্যে ভারতবর্ষকে বড়ো জায়গা দিতে আমরা কুষ্ঠিত। যেন বিদ্যাশিক্ষা সম্বন্ধে য়ুরোপের বাহিরে বিশ্বই নাই। যেন বিশ্বের মধ্যে ভারতবর্ষ বলিয়া পদার্থের অস্তিত্বই মেলে না, অথবা অণুবীক্ষণের সাহায্যে ধূলিকণার মধ্যে তাহাকে খুঁটিয়া পাওয়া যায়; সেইজন্য মৈসুরের মতো স্থানেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইটকাঠ, তাহার চৌকিটেবিল, তাহার পুঁথিপত্র,

১৭২