বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিশ্বমানবের লক্ষ্মীলাভ.djvu/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রবাসী-গ্রামবাসী সংবাদ

 বুঝলাম, সমবায় নিয়ে দোটানা ভাবের এই মূর্তি। পাছে অবশেষে সমবায়ে না গিয়ে উপায় থাকবে না মনে করে কেউ হাতে রেখে খরচ করছে, কেউ বা সমবায়ে যোগ দিয়েছে, কিন্তু ভালো মনে দিতে পারেনি বলে পরের কাজ ভেবে হাত সরছে না।

 গ্রামে এখন আমাদের জ্ঞাতি আর নেই। আমার চোদ্দপুরুষ এখানেই জন্মেছে, মরেছে, বংশের শিকড গেড়েছে, কিন্তু এ আমলে আমরা সে শিকড় উপ্‌ড়ে দেশবিদেশে ছড়িয়ে পড়েছি; আমার এখন নতুন জীবন, নতুন মন, নতুন আকাঙ্ক্ষা; তবু মনে হচ্ছে এ গ্রামের সকলেই আমার আপনার। মাঠ, জলা, জঙ্গল, কোথায় কী ছিল, সবই আমার মনে গাঁথা আছে। সেখানে সাথীদের সঙ্গে কত খেলেছি, বনের ফল, পাখির ডিম কত পেড়েছি, পালক কুড়িয়ে এনে যে-যার মাকে বালিশ তোশক করতে দিয়েছি।

 কিন্তু এ কী। বিলের ধারের জঙ্গলটায় তো কিছু ছিল না,—আজ সেখানে মস্ত একটা বাড়ি দেখছি। কাছে গিয়ে দেখি এটা নতুন তৈরি স্কুল বাড়ি, সাদা রঙের দরজা জানালা, উপরে লেখা বড়ো বড়ো অক্ষরের নামটা আমার দিকে প্যাঁট প্যাঁট করে চেয়ে না থাকলে বিশ্বাসই হত না।

 আমার ছেলেবেলায় এখানকার চাষীরা লেখাপড়ার ধার ধারত না। তাদের চিঠিপত্র লিখে পড়ে দিয়ে আমি ঝুড়ি ঝুড়ি আপেল ফল দক্ষিণে পেয়েছি। মনে পড়ে, একবার জাপান যুদ্ধের সময় একজন বিদেশী এসে পুরোনো খবরের কাগজ থেকে যুদ্ধের কথা শুনিয়ে দু’চার বস্তা বাজরা আদায় করে নিয়ে গেল।

 এখন স্কুলের ছুটি। কিন্তু ভিতরে ঢুকে দেখি একধারের ঘরে সার

১১০