বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিশ্বমানবের লক্ষ্মীলাভ.djvu/১৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গোপিকা-কর্ত্রীর কথা

তাই উথলে উঠল, আমার মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেল—“কী সাংঘাতিক।”

 বীরা। কিসে সাংঘাতিক।

 আমি। বল কী। সদ্‌গৃহস্থ স্ত্রীপুরুষ ছেলেমেয়ে কচিকাচা সব পৈত্রিক ভিটে থেকে আচমকা ঝেঁটিয়ে বার করে দিয়ে অচেনা অজানা জায়গায় মজুরি করতে চালান দেওয়া কী ভয়ংকর কথা।

 বীরা। আপনার মতের সবাই হলে তো বিপ্লবই হত না।

 আমি। তোমার নিজের কী মনে হয়,—কাজটা নিষ্ঠুর নয়?

 বীরা। নিষ্ঠুর নিশ্চয়ই। আপনারা কি মনে করেন কুধনীকে নির্ধনী করতে আমরা আমোদ পাই? কত বার চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে যায়, তবু না করলে নয় বলে করে যাই। হয় রোগবীজ মারতে হবে, নয় রোগী মরবে। হয় ধনী, নয় সমবায়—দুটো এক সঙ্গে থাকতে পারে না।—দুঃখ প্রকাশ করছেন বটে, কিন্তু আপনি কি সত্যি কাঁদতে জানেন। জগৎজোড়া শ্রমিকের আর্তনাদে যদি আপনার প্রাণ কাঁদত, তাহলে মনও শক্ত হত। শ্রমিকে শ্রমিকে দেশভেদ জাতভেদ ধর্মভেদ নিয়ে লড়ালড়ি হয় না, সেসব খুঁচিয়ে তোলে মধ্যবিতেরা নিজের নিজের কাজ হাসিল করার জন্যে; মরতে মরে শ্রমিকেরা। বলতে বলতে বীরা রণরঙ্গিণী মূর্তি হয়ে উঠল।

 এ কথার পর কী আর বলি, জিজ্ঞেস করলাম—“তুমি কি বন্দুক চালাতে জান বীরা।”

 বীরা। তা না জানলে বিপ্লবের ভিতর আসি?

 আমি। আবার যদি যুদ্ধ বাধে, তুমি লড়াইয়ে যাবে?

 বীরা। আমায় কে ঠেকিয়ে রাখে, তাই দেখব।

 আমি। সে কী, সঙিন নিয়ে খোঁচাখুঁচি করতে বাধবে না?

 রীরা। দেখুন, প্রবাসী মশায়, ধনী আর ধনীর পুষ্যি মধ্যবিত্ত ছাড়া

১৩৫