গোপিকা-কর্ত্রীর কথা
আমি। হাঁ, যতটা পারি।
বীরা। দেখবেন, আমার মুখে উলটো কথা বসিয়ে দেবেন না।
আমি। সে বিষয়ে সাবধান থাকব, ভয় নেই।
লেখা শেষ না হতেই বাইসিকেল চড়ে এক যুবক উপস্থিত— ফিটফাট নীল বিপ্লবীকুর্তা গায়ে, মাথায় নতুন টুপি, পায়ে পালিশ-করা জুতো, ভাষাও মার্জিত,—চাষার ছাঁদের নয়। “ইনি জেলাস্কুলের শিক্ষক”, বলে বীরা আমার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিলে। তিনি এসেছেন ছেলেমেয়েদের এক আলোচনাসভায় বীরাকে নিয়ে যেতে। বীরা তখনি রাজি। “চট করে একটু মুখে হাতে জল দিয়ে আসি” বলে আমার কাছে বিদায় নিয়ে গেল।
চমৎকার সন্ধ্যেটি হয়েছে, ঝকঝকে আকাশ, ফুরফুরে মিঠে বাতাস,—এর সঙ্গে মানায় গল্পসল্প, হাসিখেলা, নাচগান, না হয় আনমনে একা বসা। কিন্তু সমস্ত দিন বেদম খাটুনির পর এ মেয়ে চলল কোথায়, না ক্রোশ খানেক পথ হেঁটে এক বদ্ধ স্কুলঘরের ভিতর রাত দুপুর পর্যন্ত আলোচনা করতে যারা বৈঠকে ওর জন্যে অপেক্ষা করছে, তারাও সারাদিন খেটেখুটে এসে জমায়েত হয়েছে। আলোচনার বিষয় যে কৃষ্টিতত্ত্ব, তা ভালো করে বুঝতে বোঝাতে পণ্ডিতেও হার মানে—
ধন্য তোমরা বিপ্লবের ছেলেমেয়েরা। তোমরা কোন্ আলো দেখে ছুটে চলেছ, জানিনে,—কিন্তু তোমাদের মার নেই।
প্রবাসীর কথা এই পর্যন্ত।
তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়ে আমরাও ধুয়ো ধরি—বীরার মুখে ফুলচন্দন পড়ুক। USSR যদি সত্যি প্রেমের প্রেরণায় চলতে থাকেন, তাহলে অন্তরের হোক, বাইরের হোক, রিপুর কী সাধ্যি তার লক্ষ্মী সমেত নারায়ণ লাভের পথ আটকায়।
১৩৭