ফলেন পরিচীয়তে
কানে গেলে কেজো মার্কিন প্রশংসা না করুক, ভাগ বসাতে লালায়িত হয়ে খোশামোদ লাগায়।
এক এক দেশের নাম দিয়ে উদাহরণ দেওয়া হল বটে, কিন্তু সব দেশে নানা ভাবের লোক থাকে যারা বিচারে বসলে নিজের রুচিমতে পরদেশ সম্বন্ধে একতরফা রায় দিয়ে খালাস হয়। তাই নির্বিচারে পরের সম্বন্ধে লোকের কথা মেনে নিলে প্রায়ই ঠকতে হয়; এমন কি নিজের বিষয়ে যে যা বলে তাও বুঝেসুঝে নেওয়া ভালো। না দেখেশুনে পোকাধরা ফল চিবোতে চিবোতে আমি নিরামিষাশী বলে বড়াই করলে তো হয় না; অন্যদিকে পরের হিতের ভাবনায় যে পাগল, সে নিজেকে নাস্তিক বললে আমরা কি তা মানতে বাধ্য।
USSR-এর বস্তু ভালোই বাড়ছে, আরো বাড়বে বলে লক্ষণ দেখা যায়। তবে, বস্তু যে-দেশের সে দেশেই আগলানো থাকে, তাতে লোভ করে লাভ কী। কিন্তু ভাবের দেশকাল নেই, একার ভোগে তাকে আটকে রাখা যায় না। সেজন্যে আমরা চাই USSR-এর ভাব বুঝতে, লোভনীয় লাগলে আদায় করে নিতে।
ভাব কথাটাই বেশ রসে ভরা। ভাব হল মনের বাস্তুভিটে, বিশ্বরাজ্যের যে জায়গাটুকু আপনার করে নিয়ে মন গুছিয়ে বসেছে। “দু’জনে বড়ো ভাব”—মানে দু’জনের মন এক বাসায় থাকে, অন্তত পরস্পরের কাছে ঘন ঘন যাওয়া আসা করে। এমন কুনো মনও দেখা যায় যে নিজের বাড়ি ছেড়ে বেরতে পারে না; তার পক্ষে অন্যের ভাব বোঝা অসাধ্য। জনবৃষের বাচ্ছা বৃন্দাবনে গিয়ে পড়লে না জানি কী ঢঙে সেখানকার লীলা খেলত।
ভাবের পরীক্ষা সম্বন্ধে সাবধানে থাকার বিষয় এই, যার পরীক্ষা করা হয় আর যে পরীক্ষা করে, বিচারফলের মধ্যে দুজনেরই ভাব মিশে যায়।
১৩৯