ধর্ম এব হতো হন্তি
নানাচিহ্নধারী গুহাবাসী[১] তাপসদের ভিড়, দেহরাখা সাধুসন্তদের সমাধিস্থানের ছড়াছড়ি, ব্যাধিহরা পুণ্যভরা জলের রকমারি আধার—সে দেশকালের ধারণামতো ধর্মের যা-কিছু তোড়জোড় দরকার, কোনোটারই ত্রুটি ছিল না।
আর তেমনি বিনয়ে-হেঁট-মাথা, যা-বল-তাই-সই-গোছের নিষ্ঠাবান্ প্রজার দল। তারাই মাথার-ঘাম-পায়ে-ফেলা রোজগারের ভাগ যুগিয়ে এই বিরাট ধর্মব্যাপার বজায় রেখেছিল। রোগশোক শান্ত করার প্রয়োজন বোধ করলে, কিম্বা লালদিনে[২] পুণ্যসঞ্চয় করার ঝোঁক চাপলে, ছেলে-বুড়ো-স্ত্রীলোক মিলে তারা লাঠিহাতে বোঁচকাকাঁধে, পায়ে হাঁটতে হাঁটতে এই সব মঠ মন্দিরে লাখে লাখে গড় করতে যেত; ইষ্টমূর্তির সামনে বাতি চড়াত ও মৃতসন্তদের তুলে রাখা গায়ের কাপড়ে চুমো খেত; পাণ্ডাপাদ্রীর কাছ থেকে পবিত্র জল কিম্বা আশীর্বাদ কিনে আনত।
সেখানকার বিগ্রহদের পশুরক্তে রুচি ছিল না বটে, তবে তাদের কাছে বর আদায়ের আশায় ছোটোবড়ো মোমবাতি থেকে আরম্ভ করে দামী দামী গয়না পর্যন্ত মানত করা হত,—তা অপরকে ঠকানো, জব্দকরা, পীড়া দেওয়ার বর চাইলেও সে সব অমায়িক বিগ্রহবৃন্দের বিরক্তির কোনো লক্ষণ প্রকাশ পেত না।
কয়েকটি করে গ্রাম মিলিয়ে একটা করে গির্জে, আর সেই সঙ্গে একটি পাদ্রীবাবাজি (batushka) বরাদ্দ ছিল—তাদেরও খরচ অবশ্য চাষাভুষোকেই বইতে হত। সাধারণ প্রজার তুলনায় থাকার বাড়িটা
১৪৩