ধর্ম এব হতোহন্তি
ধার্মিকেরা অবাক। ধর্মস্থানের ধর্মঅনুষ্ঠানের ধর্মযাজকের এ হেন অপমান, অথচ ভগবানের কোপের কোনো চিহ্ন নেই। ধরণী দ্বিধা হওয়া দূরে থাক একটুও কাঁপল না, কারো মাথায় বাজও পড়ল না। আর রুশের সেই ডাকসাইটে ধর্মপ্রাণ চাষীবৃন্দ,—তারাই বা কোন প্রাণে এই সর্বনাশ সয়ে গেল। এমন না যে তারা একেবারে মাটির মানুষ, রা কাড়তেই জানে না। খেতে না পেলে তারা কতবার খুনোখুনি কাণ্ড করেছে। কী সম্মোহন মন্ত্র জানে বিপ্লবীরা যে তাদিকে এমন কেঁচো বানিয়ে দিলে।
যাঁরা চোখ চেয়ে দেখলেন, তাঁরা কিন্তু এমন কিছু তাজ্জব হবার কারণ পেলেন না। শিখিয়েছ নির্বিবাদী হতে, হয়েছে নির্বিবাদী, তাতে আর আশ্চর্য কী। দিশাহারা হলে চাষারা যাদের কাছে বিধান নিত তাদের বিপদে এখন বিধান দেয় কে। কাজেই ধর্ম বলে যা জানত, এখন জানল তার উপর নির্ভর করা চলে না। গির্জের কর্তাই শ্রীহীন, কার খাতিরে গির্জেয় যাবে। কাজেই চাষায় নিজের পথ নিজে দেখতে লাগল।
দেখাশোনার লোক নেই, গির্জে ভেঙে পড়ছে, ভাঙা ইটকাঠ যে-যার বাড়ির কাজে লাগিয়ে নিলে। রবিবার এখন হল গ্রামবাসীর আরামের দিন,—বাড়ি বসে গৃহস্থালি তদারক, খোসগল্প, হাসিখেলা এই সবের অবসর পায়। এতে বিচলিত হবার কোনো কারণও দেখে না, ভগবানের অসন্তোষের লক্ষণ তো নেই; জীবনের সুখদুঃখ আগের মতোই, বরং করবৃত্তি উঠে যাওয়ায় অবস্থা হয়েছে সচ্ছল। এমন বিপ্লব মেনে নেওয়ার জন্যে কি কোনো মন্ত্রতন্ত্র লাগে।
তবে বিপ্লবী কর্তারা একটু কৌশলও খেলেছিলেন। জমির স্বত্ববদল নিয়ে তাঁরা চাষাদিকে অকালে ঘাঁটাননি। বিপ্লবের নতুন ধারা
১৪৫