বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিশ্বমানবের লক্ষ্মীলাভ.djvu/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ধর্ম এব হতোহন্তি

বিচারে রুচিতে ভেদ,—এরকম ছন্নছাড়া হয়ে ধর্মকে মারলে ধর্মের পাল্‌টা মার কেমন ক’রে খেতে হয়, আমরা ভুক্তভোগী তা হাড়ে হাড়ে জানি।

 ধর্মকে অন্যভাবে মেরে রুশের রাজপুরুষরা তাদের ধামাধরা ধর্মজীবীদিকে সঙ্গে জড়িয়ে ধর্মের মারে সমূলে ধ্বংস হল। কিন্তু ঐ রুশেরই প্রজারা ধর্মমারা পাপে লিপ্ত না থাকায়, বিপ্লবের দ্বারা তারা উদ্ধার পেয়ে গেল। তাদের মধ্যে আগে যারা জেগে উঠল, কিবা নর কিবা নারী, তারা নিজেকে ভুলে অন্য যারা মোহনিদ্রায় আধাঅচেতন, তাদিকে বাঁচিয়ে তুলতে প্রাণপাত করছে। ফলে রুশের জাগ্রত আত্মশক্তি রাষ্ট্রকে সমবায়ে সমবায়ে জড়িয়ে এমন অভেদ্য বর্ম পরিয়েছে যে যত পাশ্চাত্ত্য রাজতন্ত্রী আছে, তারা বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েও ভয় দেখাতে পারেনি। ভয় পেতে অপর পক্ষরাই পাচ্ছে, এদের তেজ দেখে তাদের বিরুদ্ধতার ঝাঁজ আপনিই মরে আসছে।

 এখানকার শেষ প্রশ্ন এইটুকু—এমন ভাবে অভয়ে প্রতিষ্ঠিত যারা, তারা ভগবানের কোনো বিশেষ নাম উচ্চারণ করে না বলে তাদের কি ধর্ম নেই। কানাই বিনা খেয়ানৌকো তো টলতে টলতে চলে—যদি নৌকোটা বেশ সোজা চলতে থাকে তাহলে চর্মচোখে দর্শন না পেলেও, মন কি বলে না যে, হালে কানাই ঠিক আছেন। রুশের দেশে কলির শেষে বোধ হয় জয়দেব কবির কথা আর খাটছে না,—হরির নাম বাদ দিয়েই তাঁদের গতি হয় বা।

 একটা ছড়া কেটে ধর্মের কাহিনী শেষ করে আনা যাক:

নরের মিলন হলে মেলে নারায়ণ।
ফাঁকা নাম হাঁকে তাঁর দূরে পলায়ন।

১৪৯