স্বে মহিম্নি
পতির চড়টা চাপড়টা মন্দের ভালো, তাই চুপচাপ না থাকলেও, তার ঘরে টিঁকে থাকে ঠিক।
পৈশাচিক সমাজে শৌখিন নর-পুঙ্গব তার অর্থ-সামর্থ্যে যে পর্যন্ত কুলোয়, ততগুলি রমণীরত্ন সে সংগ্রহ করে। অবলা মানুষ নিরাশ্রয় থাকলে পাঁচ জনের মন যুগিয়ে তাকে চালাতে হত, তার চেয়ে এক জনকে খুশি করে যদি খাওয়াপরা সাজসজ্জা আরামে পাওয়া যায় মন্দই বা কী, তাই এ অবস্থায়ও সে পোষ মেনে থাকে, এমন কি কামিনীগিরি প্র্যাক্টিস ক’রে কিছু সুবিধেও ক’রে নেয়।
আসল বাঁধন ধর্মের ফাঁদে। শাস্ত্রে আইনে মিলে ইহকাল পরকাল জড়ানো শিকল বার করেছে। তন্ত্রমতো মন্ত্র একবার আওড়ে ফেললে কনের আর ছাড়ন-ছোড়ন নেই। গৃহকর্তা বেঁচে থাকতে তার ঘরের, তার কুলের, তার শখসাধের প্রসঙ্গ নিয়েই জীবন, পতিদেবতা মারা গেলেও নিজেকে ভুলে তার ধ্যানে মশগুল থাকতে হয়। পুরস্কার কী,—না “সতী” খেতাব। আর পায় কে? ধর্মের সিঁদকাঠির মতো উঁচু অঙ্গের মন চুরী করার উপায় আর নেই, স্বাধীন বিচারের মাথা ঐখানেই খাওয়া গেল। জীবন উৎসর্গ তো তুচ্ছ কথা, সতী বললে পতিব্রতা আগুনেও ঝাঁপ দিতে রাজি।
আজকালকার রুচিতে এ সব অবস্থার কোনোটাই যদি ছেলেমেয়েদের মনে না ধরে, তাতে তাদের অপরাধ কী। যে ভাবে হোক ভয় দেখিয়ে, ঘুষ খাইয়ে, বোকা বুঝিয়ে—স্ত্রীজাতিকে মানিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু তা’তে তার হালটা কী দাঁড়ায়। নিজেকে কেন্দ্র করে তার চারদিকে স্ত্রীকে ঘুরিয়ে যে পুরুষ সন্তুষ্ট থাকে, তার সেই সংকীর্ণ মনের মাপে সেই ঘরের বউ, সেই কুলবধূকে খাটো হয়ে থাকতে হয়।
১৫৯