চতুর্বর্গের ফল বিচার
হোক; আর, ছুটির সময় বাগানে বেড়াতে গিয়ে হোক; USSR-এর শ্রমিকের দলে যেখানে অন্তরঙ্গ ভাবে মিশেছি,—কবি ভাইদেরও শ্রমিকের দলেই ধরছি,—আমার মনে এক অভাবনীয় আনন্দের ঢেউ উঠেছে। তাদের মুক্ত জীবনের ছোঁয়া পেয়ে, আমার মধ্যেও কী যেন একটা বাধা সরে গেল, দরদের ফোয়ারা ছুটল, কখনো বা চোখে আনন্দের জল ঠেলে উঠল। তাই দেখতে পাবে আমার রুশে-তোলা ছবিতে এমন একটা দিলদরিয়া হাসি ফুটে আছে, দেশের ছবিতে যার লেশও নেই।
“আর ছেলেদের আড্ডায়,—হঠাৎ তাদের একটা চড়িভাতিতে গিয়ে পড়েছিলাম—কী আনন্দের জেল্লা তাদের মুখ আলো করে ছিল। সুস্থ পুষ্ট পরিচ্ছন্ন শরীর, তাদের বিশ্বাস-ভরা অসংকোচ চাউনি যেন নিজের আনন্দের ভেট আমায় দিতে এগিয়ে এল। তাদের ভাষা জানিনে, জানার দরকারও বোধ করিনি। তারা আমায় বন্ধু ব’লে চিনলে, তাতেই আমার মন কেড়ে নিলে, তার উপর কথায় বলার কী থাকতে পারে।
“তরুণ-তরুণীদের মধ্যেও সেই সরল হাসি, সহজ আনন্দ। প্রমোদ উদ্যানে গিয়ে দেখি তারা নানা আমোদে মেতেছে, কিন্তু কী শ্লীলতা, কী সংযম। ইতরতা নেই, ছ্যাবলামি নেই; হাসিতে নিছক ফুর্তি, খোঁচার ভাব, বিদ্রূপের ভাব, কারো মনে কষ্ট হতে পারে এমন কোনো ভাবই নেই। খেলার আয়োজন, ব্যায়ামের আয়োজন, নাচের আয়োজন, এসর তো আছেই, তার উপরে জায়গায় জায়গায় ইতিহাস, ভূগোল, সাধারণ বিজ্ঞানের বিষয়ে বক্তৃতাও চলেছে; যারা শুনছে পুরো মন দিয়ে শুনছে, যারা অন্য আমোদ চায়, তারা অশিষ্টতা ক’রে রসভঙ্গ করছে না। সকলের জায়গা যেখানে নাও কুলোচ্ছে সেখানে ঠেলাঠেলি নেই, পালায় পালায় ঢোকার জন্যে প্রসন্ন মনে বাইরে অপেক্ষা করছে। তাই,
১৭০