চতুর্বর্গের ফল বিচার
পরিষ্কার হবে;—যে প্রেম গাঢ় হয়ে এলে নারায়ণকে সুদ্ধ টেনে আনবে?
আমাদের বিবেচনায়, অবস্থা সব রকমে স্বাধীন রাখতে পারলে সে প্রেম লাভ হবার সম্পূর্ণ সম্ভাবনা,—তবে যদি ইতিমধ্যে বাইরের রাজশক্তির আক্রমণে অন্তরের শান্তি ভঙ্গ হয়ে বিপ্লবের তৈরি অনুকূল অবস্থাটাই ওলট-পালট হয়ে যায়,—সে কথা আলাদা।
ন হি কল্যাণকৃৎ দুর্গতিং গচ্ছতি
মোক্ষের বিষয়ে সাদা করে ভাবতে গেলে প্রথমেই কথা ওঠে—কোথা হতে কিসের মধ্যে মুক্তি।
যে ক্লান্ত-ক্লিষ্ট আত্মা ভবের পালায় ফাঁকি দিয়ে সরে পড়তে ব্যস্ত, সে হয়তো শূন্যের মধ্যেও আরামের না হোক, বিরামের কামনা করতে পারে; কিন্তু যে আনন্দ-মনে খেলছে, সে খেলার এক ধাপ থেকে পরের ধাপে এগোতে এগোতে খেলার শেষে—হারের নয়, জিতে যে শেষ, তাতে পৌঁছতে চায়।
খেলাটা তাহলে কী রকমের।
আনন্দলোকের আলো থেকে তো খেলুড়েরা নেমে এসেছে, ইহলোকের অন্ধকারে তো ডুব মেরেছে, আবার আলোর আনন্দে ফিরে যাওয়াটাই হল খেলার বাকি পালা। এক কথায় বলতে গেলে, আসার সময় ডুবুরির মতো এক ঝাঁপে তলানো, ফেরায় সময় নিয়ম বজায় রেখে, নানা ভয়-বিপত্তি কাটিয়ে, তবে ওঠা। অন্ধকারে তলিয়ে গিয়ে না উঠতে পারাটা ভয়ংকর হার, মনে করলে গা ছমছম করে; মাঝের আবছায়ায় পথ ভুলে ঘুরে বেড়ানো, সে-দুর্ভোগও হারেরই সামিল। সব বাধাবিঘ্ন পেরিয়ে আনন্দে ফেরার শিহরণটাই জিত।
১৭২