বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিশ্বমানবের লক্ষ্মীলাভ.djvu/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ন হি কল্যাণকৃৎ দুর্গতিং গচ্ছতি

চালাচালি নানা রকমে হতে পারে,—একজনের বেশি দেওয়া, একজনের বেশি পাওয়া, চাকার মতো দেওয়া নেওয়ার ঘোরাফেরা; কিন্তু যতই রকমারি হোক, দুজনের মধ্যে প্রেমের আদানপ্রদান শুরু হলে, মূল উৎস থেকে দুজনেরই তেজ-টানা বেড়ে যায়, দুজনেরই আনন্দ বেশি বেশি উদ্‌বৃত্ত হয়, ফলে দুজনেই প্রেমের আলোয় দুনিয়া সুন্দর দেখে প্রেমর ভাগ জগৎকে বিলোয়। এর বিপরীত অবস্থা হলে সন্দেহ হয়, সত্যিকার প্রেম হয়েছে, না কোনো প্রয়োজন বা প্রবৃত্তি বা মোহের ঝোঁকে দুজনে কাছাকাছি এসেছে মাত্র।

 প্রেম বিদেহী হলেও, দেহের নামরূপটা বাদ রাখা চলে না। শিষ্য বেচারী সদানন্দের খোঁজে বেরিয়ে চিদানন্দের কাছে গিয়ে পড়লে, তাঁর সঙ্গে তার বাঞ্ছিত সম্বন্ধ নাও ঘটতে পারে। তাছাড়া কণ্ঠস্বরের, মুখচোখের ভাবের, সাহায্য ছাড়া গুরুর মর্ম সব সময়ে হৃদয়ংগম নাও হতে পারে। আসল কথা, বোঝার সুবিধের জন্যে, স্থূল দেহ, সূক্ষ্মশরীর, প্রাণমন চিত্তবুদ্ধি, আত্মার এ সব ভাবকে আলাদা করে দেখি বটে, কিন্তু সবই তো একের ভিন্ন স্তরে প্রকাশ, কোথায় একটার শেষ অন্যটার আরম্ভ ধরাই যায় না। স্থূল দেহের মধ্যে মাদক ঢোকাও, সূক্ষ্ম বুদ্ধিবৃত্তি যাবে গুলিয়ে। ওদিকে আত্মার উন্নত অবস্থা শরীরের জেল্লায় প্রকাশ পায়। তবু বলতে হয়, প্রেমের খেলা আধ্যাত্মিক স্তরেই চলে।

 নরনারী ভেদে বিদেহী প্রেমের কিছু রসভেদ হয় কি না, সেকথা মাঝে মাঝে ওঠে। নরনারীর দেহযন্ত্র নিয়ে অবশ্য একথা উঠতেই পারে না, তবে সূক্ষ্মস্তরেও নরনারী ভেদ স্বীকার করতে হয়। বীরাঙ্গনাকে বলা যায়, সে দেহে নারী, মনে পুরুষ। মহাপ্রভুর রাধাভাবে আরাধনা মানে তাঁর আধ্যাত্মিক নারীরূপ নেওয়া। খ্রীস্টান সাধকেও বলেন, যিশুকে জীবনের নিয়ন্তারূপে পেতে হলে আত্মাকে নারীপদবীতে তুলে

১৭৭