পঞ্চভূতের বশীকরণ
প্রকৃতি নিজেই বালিকে দমাবার চেষ্টা করে থাকে। হাওয়ায় উড়ে, জলে ভেসে, পায়ের কাদায় পাখির ময়লায়, নানা উপায়ে ঘাসের গাছের বীচি দুনিয়াময় চলাফেরা করে। কিন্তু বালির মধ্যে শিকড় গেড়ে গজিয়ে ওঠার বিঘ্ন অনেক। অকালে অস্থানে পড়লে বীচি শুখিয়ে যেতে পারে; যথাস্থানে পড়লেও বাতাসে সরিয়ে ফেলতে পারে, বালিচাপা দিতে পারে।
কারাকুমের “কান্দিম” নামের এক রকম লতানে ঘাস কী ক’রে নিজের কাজ উদ্ধার করে, তার কথাটাই বলি। এ ধরনের ঘাস বা আগাছা আমাদের বেলে-জায়গায়ও দেখা যায়।
কান্দিমের বীচি ছোট্টো ফাঁপা গোলার মতো, তার গা-ময় কাঁটা। সে শুখনো বালির উপর পড়লে হাওয়ার সঙ্গে গড়িয়ে বেড়ায়, যতক্ষণ না রস জোটে। বাতাস যদি বালি ঝেঁটিয়ে এনে তাকে চাপা দেবার যোগাড় করে, হালকা বলটা ফুরফুর ক’রে বালির আগে আগে উড়ে চলে। রসা জায়গায় পৌঁছলে কাঁটাগুলো গেঁথে যায়, বীচি আর ন’ড়ে বেড়াতে পায় না। সে অবস্থায় যদি চাপা পড়ে তখন কান্দিমে-বালিতে লাগে রেশারেশি, বালির ঢিবি বাড়ে তো ঘাসও সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে। কান্দিমের গাঁঠে-গাঁঠে শিকড়, উপরের চাপ সত্ত্বেও সে তাই দিয়ে তলার বালিকে আষ্টেপিষ্ঠে বেঁধে ফেলে। পরে কোনো সময় জোর বাতাস উঠে উপরের ঢিলে বালি সরিয়ে ফেললে, শিকড়ে বাধা ডুমো ঢিবিটা ঘাসের গোচ্ছা মাথায় পরে জ’মকে বসে থাকে।
এ ধাঁচার ঘাস আরো আছে যারা বালিকে হার মানাবার অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে উড়ে এসে জুড়ে বসে। তবে কি না, এরা হারিয়ে নিজেরা হারে: বাড় বাড়ে, কিন্তু বংশ রাখতে পারে না। তার কারণ, একবার পুরোনো পাতা ঝরাতে আরম্ভ করলে সেগুলো প’চে বালির উপর একটা
২৬