বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিশ্বমানবের লক্ষ্মীলাভ.djvu/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

জলের কথা

আছে। এ পথটাই যদি মানুষের বেশি উপকারী, তবে অতশত বৎসর পর যা ঘটবে, তাকি দু’তিনটি পঞ্চবার্ষিক সংকল্পের মধ্যে এগিয়ে আনা যায় না?

 তাহলে ভাবতে হয় আমুদরিয়াটা অমন দু-মনা নদী কেন।

 হয়েছে কী, বোখারা শহরের কাছাকাছি এসে, আমুদরিয়া পড়েছে একটা দাঁড়-জমির মুখে। সেখান থেকে দুইরোখে দুই খাল জমি চলেছে। নদীটা এখন উত্তরমুখী খাল ধরেছে, তাই থেকে বোঝা যায় এ খালটাই বেশি নিচু। এক ঘড়া জল গড়ানে জায়গায় ঢাললে দেখা যায় ধারাগুলি বেছে বেছে কেমন সবচেয়ে নাবী ঢাল ধরে চলে। যদি মাটি চাপা দিয়ে কোনো একটা ধারার পথে বাধা দেওয়া যায়, তখন সেটা অগত্যা কম নিচু পথই নেয়। এই মাটি চাপা দেওয়ার কাজটা নদী পলি ফেলে নিজেই করে।

 নদীর ধর্মই হল পতিত-উদ্ধার,—নিচুকে উঁচু, শুষ্ককে সজীব, অহল্যাকে[] সীতার[] উপযুক্ত করা। এই ব্রতপালনে আয়ুদরিয়া চলতি পথটাকে ক্রমশ ওঠাতে থাকে; শেষে যখন তলার সঙ্গে সঙ্গে জলও বেশি উঁচু হয়ে ওঠে, তখন পতিতপাবনী অন্য পথটায় গড়িয়ে পড়েন।

 ঘড়ির পেণ্ডুলামের মতো আমুদরিয়ার পালা করে এ-পথ ও-পথ ধরার এই কারণ।

 পথ বদলাবদলির হিসেব যদি বোঝা গেল, তাহলে যে পথ চাই সে পথে নদীকে চালাবার উপায়ও ধরা পড়ল। পশ্চিমমুখী খালের চেয়ে নদীর জল উঁচু হয়ে উঠলেই সে কাশ্যপ সাগরের দিকে চলবে,—এই না? আচ্ছা বেশ, তবে পলি-পড়ার পথ চেয়ে বসে না থেকে, বাঁধ বেঁধে


৩৭

  1. যে জমি শুখিয়ে শক্ত হওয়ায় তাতে হল (লাঙল) চলে না।
  2. লাঙলের ফলা।