হাওয়া যতই শুখিয়ে থাক্ না কেন, তাতে বেশ একটু জলের ভাপ থেকেই যায়। যখন মানুষের সাধ্যি এমন হবে যে, অতিরিক্ত খরচ না করে যেখানে ইচ্ছে আকাশের জল টেনে নামাতে পারবে, তখন ইন্দ্রের পৌরাণিক কর্তব্য আধুনিক মানবে নিজেই সেরে নিতে পারবে। তাহলে দেবরাজ শখের নাচগান নিয়ে মশগুল থাকার সময় “গেলুম রে, মলুম রে” রবে কেও তাঁর মজলিসের রসভঙ্গ করতে দ্বারস্থ হবে না।
তবে সাবধান। অব্যবস্থিত রাজ্যে এবিদ্যে খাটাতে গেলে বিজ্ঞানী উভয় সংকটে পড়ে যেতে পারেন। যার বাড়ি বিয়ে, সে আবদার করবে আকাশ পরিষ্কার ঝক্ঝকে থাক্; ওদিকে যে-চাষার খেত খাঁ খাঁ করছে সে ঝম্ঝমে বৃষ্টির জন্যে আপসা-আপসি করবে। মাঝে থেকে বিজ্ঞানী-বেচারীকে এক পক্ষ না এক পক্ষের ঠ্যাঙার গুঁতো না খেতে হয়।
USSR-এ সে হাঙ্গামার ভয় নেই। তাদের পঞ্চ বার্ষিক সংকল্পের খবর আগে থাকতেই সকলকে জানিয়ে দেওয়া হয়। যেদিন না বর্ষালে কারো ক্ষতি নেই, উৎসবের পক্ষে সেই দিনই শুভদিন ধরা হবে; আকাশের কোন্ ভাগে কোন্ গ্রহতারা দেখা দিয়েছে তাতে মামুষের ভাগ্যের ওলট-পালট কল্পনা করার দরকার হবে না। মনের মিলে পরস্পরের হিতসাধনে মানুষ যে যে জায়গায় জমায়েত হয়, সেগুলিকেই পরম তীর্থ বলে মানা হবে; ভিড় ঠেলে মরতে মরতে এ-ঘাটে ও-ঘাটে ডুব দিয়ে, মন বা কপাল ফেরাবার দুরাশা মনে পোষা হবে না। যে বর্ষণে দেশশুদ্ধ লোকের অন্নসংস্থান হবে, তার জন্যে দেবতার খামখেয়ালী মর্জির অপেক্ষা থাকবে না, স্তবস্তুতির বাজে খাটুনি বেঁচে যাবে, যাদের গরজ তাদেরই প্রতিনিধি নিজগুণেই যথাযথ ব্যবস্থা করবেন—এই হচ্ছে USSR-এর সমীকরণ যজ্ঞের নববিধান।
৫০