বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিশ্বমানবের লক্ষ্মীলাভ.djvu/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পাতালের কথা

লোহা, সীসে, টিন—সবি গলা অবস্থায়, তবে উপরকার ভীষণ চাপের কারণে টগবগ করে না ফুটলেও তাতে তরলতার কিছু কিছু গুণ আছে।

 বিজ্ঞানীরা এই পাঁচ মিশল গলা পদার্থটাকে magma বলেন, উপরে উঠে ঠাণ্ডা হলে এর থেকে যত রকম ধাতু পাথরের ও অবশেষে মৃত্তিকারও জন্ম হয়, সে খাতিরে আমরা একে মাতৃকা বলতে পারি।

 এই মাতৃকার তলায় কোন্ প্রচণ্ড চুলোয় আগুন জ্বলছে?

 তলায় চুলোই নেই। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন যে, আরো ৫০।৬০ মাইল নিচে গেলে যত চাপ বাড়ে তত তাপ বাড়ে না। উত্তাপের কারণ মাতৃকার মধ্যেই আছে—এক ঝাঁক সেই রেডিও-তেজী ধাতুর পরমাণু, যারা ক্রমান্বয় ফেটে ফেটে বেরচ্ছে, তারাই এই ভীষণ আঁচ জাগিয়ে রাখে। এদেরই কল্যাণে পৃথিবী চাঁদের মতো জুড়িয়ে গিয়ে প্রাণীপোষার অনুপযুক্ত হয়ে পড়েনি।

 গড়ে ২০ মাইল নিচে এই রেডিও-তেজী ধাতুর ভারি ভিড়। আরো ৬০ মাইল নেমে গেলে এগুলির চিহ্ন বড়ো একটা পাওয়া যায় না, সেখানকার চাপে পাথর তরল হতে পায় না। সুতরাং ৬০ মাইল গভীর মাতৃকা সাগরের শক্ত পাথরের তলা আমাদের পায়ের ৮০ মাইল নিচে পৃথিবীর ব্যাসের মাপ ৮০০০ মাইল, কাজেই কেন্দ্র থেকে ভূপৃষ্ঠ ৪০০০ মাইল তফাত। এই ৪০০০ মাইলের উপরকার ৮০ মাইল স্তরের এইটুকু খবর পাওয়া গেছে।

 জলের সমুদ্রে যেমন জাহাজ, তেমনি পৃথিবীর উপরের স্তরটা, ডাঙাই হোক, পাহাড়ই হোক, আর সাগরজলে ভরা খাদই হোক, সবই সেই মাতৃকার উপর দোলা খাচ্ছে; তবে দোলের তালটা খুব বিলম্বিত। ডাঙার তলার পাথরের ভিতটা যত ভারি, সমুদ্রের তলার ভিতটা তত

৫৫