আহারের সমস্যা
না কোনো প্রাণী হত্যা না করলে তার প্রাণই বাঁচে না। কাজেই খোদার উপর খোদকারি ক’রে প্রকৃতির প্রকৃতি বদলাতে না পারলে মানুষের মানুষ হওয়াই দায়।
মহাভারতে দুরকম রাক্ষসের পরিচয় পাওয়া যায়। বর্বর-অবস্থায় মানুষের হিড়িম্ব রাক্ষসের মতো ভাব—যাকে পাই তাকে খাই, জুটলে নাচি গাই, নইলে হন্যে হয়ে বেড়াই। সভ্যতার বড়াই করলেই তো হয় না, আজ পর্যন্ত অনেক জাতের মানুষের জীবনযাত্রা ঐ রকমই। কিন্তু বকরাক্ষসের মতি অন্য ধরনের। সে পরের আমন্ত্রণ থেকে বাঁচিয়ে গ্রামকে স্বচ্ছন্দে রাখত, তার দাম হিসেবে নিজের পেটচালাবার জন্যে পালা করে একজন গ্রামবাসী খেত।
উৎকৃষ্ট মানুষ বকের নিয়মে আশ্রিত প্রাণীদের সঙ্গে ব্যবহার করতে চায়। কিন্তু অনেক সময় সে ঐ রাক্ষসের মতো মাত্রা ঠিক রাখতে পারে না। দেখো না কেন, আমাদের ধর্মপ্রাণ জাতের মধ্যে নিজের পাঁঠা খাবার শখটা দেবতার উপর চাপিয়ে একদল ভক্ত রক্তনদী বইয়ে উৎকট আমোদে মাতে। সভ্যতা-অভিমানী মার্কিন দেশে জানোয়ার-মারা কলে এক দিকে দিয়ে শুয়োর ঢুকিয়ে জন্তুটার আর্তনাদের রেশ কান থেকে না যেতেই অন্য দিক দিয়ে তার চামড়ার জুতো বার করে নিজের কেরামতি দেখে নিজেই তাক।
সে যাই হোক, নরোত্তম পদ পেলে কী হবে বলা যায় না, নরের এখনকার অবস্থায় প্রকৃতির সঙ্গে রফারফি ছাড়া গতি নেই। বাঁদর মাংসাশী নয়, সে পাতা ফল খেয়ে থাকে। কিন্তু অভিব্যক্তির তাড়ায় যখন বানরের এক দল গাছ থেকে নেমে দুপায়ে খাড়া হয়ে নর-রূপ নিল, তখন পড়ল ফাঁপরে। ফল থেকে এসে গেল দূরে, অথচ চাষবাস
৬৫