বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিশ্বমানবের লক্ষ্মীলাভ.djvu/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কুলশীলের রহস্য

হয় না, তা তো নয়। মানুষ ও-বিষয়ে হাত লাগাবার আগেই প্রকৃতির মামুলী-নিয়মেই কত নতুন নতুন উন্মেষ প্রকাশ পেয়েছে। নইলে আদি পক্ষীজোড়ার বংশধরদের মধ্যে রাজহংসই বা ধবধবে সাদা, ময়ূরই বা রং-বেরঙে চিত্রিত হল কেমন করে। এ পর্যন্ত প্রাণীদের জাত বদলানো সম্বন্ধে তো প্রকৃতিরই অপেক্ষা করে চলতে হয়েছে। দৈবাৎ কোনো সুবিধেজনক নতুন গুণ জন্মাতে দেখলে তবেই তাকে জাতের মধ্যে কায়েম করার তদ্বির করা হয়েছে,—যেমন এক মেষপাল একটি খাটো পায়ের বিকৃত বাচ্ছা পেয়ে তাই দিয়ে বেঁটে ভেড়ার জাত গড়ে তুলল, যারা বেড়া টপকে পালাতে না পারায় তাদিকে বেশ সহজে আগলে রাখা যায়। তবে প্রকৃতিকে নিজের চালে চলতে দিলে এক আধটা নতুন গুণ জাতের মধ্যে বসে যেতে, অভিব্যক্তির পথে জাতের দু এক পা এগোতে, যুগের পর যুগ কেটে যায়।

 সংস্কার আঁকড়ে থাকা সম্বন্ধে জননিকাগুলো হিন্দুমানুষকেও হার মানায়। কোনো বিজ্ঞানী একজোড়া বাবুই পাখি খাঁচার মধ্যে পুষেছিলেন। স্বাভাবিক অবস্থায় তারা যদিও পোকা খায়, তিনি তাদের জন্যে ছাতু খাবার ব্যবস্থা করেছিলেন আর ঘাসের বোনা বাসার বদলে টিনের কৌটোর মধ্যে তাদের থাকার জায়গা দিয়েছিলেন। তাতেই তারা বেশ রইল, জোড় বাঁধল, ডিম পাড়ল, বাচ্ছা হল। সে বাচ্ছারা ঐভাবেই বড়ো হল, তাদেরও খাঁচার মধ্যে বাচ্ছা হল। কাজেই এসব বাচ্ছারা পোকা ধরে খাওয়া, ঘাস বুনে বাসা বাঁধা কিছুই শিখতে পেল না। কিন্তু সেই বাচ্ছার বাচ্ছাকে যখন খাঁচার বাইরে ছেড়ে দেওয়া হল, তারা প্রথম থেকে ইতস্তত না করেই পোকা ধরে খেতে লাগল, ঘাস কুড়িয়ে বাসা বাঁধতে লেগে গেল,—যেমন-তেমন বাসা নয় ঠিক সেই বোতল গড়নের। জননিকাদের মধ্যে পূর্বস্মৃতি বা সংস্কার (নাম যাই

৮৭