ঈশাসংকট
থাকা উচিত। জ্ঞানের নিচুস্তরে থাকতে উঁচু রকমের প্রশ্ন তুললে, সদুত্তর পেলেও অনেক সময় তার মানে করা যায় না। এক ইংরেজ বিজ্ঞানী এর একটা মজার উদাহরণ দিয়েছেন।
মনে করো, এক অঙ্কনবীশ আলোর গতি গুনতে শিখেছে, কিন্তু জ্যোতিষ্কের হালচাল পর্যন্ত তার বিদ্যের দৌড় নয়। একদিন, সামনের বনের উপর এক রামধনু দেখে, তার গুনে বার করার শখ হল, ঐ পাঁচরঙা আলো কতদুর থেকে আসছে। নিয়মমতো অঙ্ক পেতে উত্তর বেরল—‘৯,৩০,০,০০০’ মাইল। অঙ্কনবীশ বার বার পরখ করে মাথা চুলকে ভাবতে লাগল, “তাইতো, কষার ভুল পাচ্ছিনে, অথচ গণনার একি অদ্ভুত ফল।” সামনের বনটা তো মাইল কতকের বেশি দূর হতেই পারে না। তার ধাঁধা লাগা দেখে এক জ্যোতির্বিজ্ঞানী বন্ধু আশ্বাস দিলেন—“ওহে, উত্তর ভালোই পেয়েছ। রামধনু যাকে বলে সে তো মেঘ থেকে ঠিকরে-আসা সূর্যকিরণ বই অন্য কিছু নয়। ওর দিকে মুখ করলে সূর্য থাকে পিছনে, সেই কথা বিপরীতের মাইনাস্ চিহ্ন (—) জানিয়ে দিচ্ছে। আর সূর্য ৯, ৩০, ০০, ০০০ মাইল দূরে তো বটেই।”
আধ্যাত্মিক তত্ত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা হিমসিম খেলেও, যন্ত্রের সাহায্যে বুদ্ধি খাটিয়ে যা পান, তার বর্ণনা করায় তাঁরা এমন পোক্ত যে, যার ইচ্ছে সে যাচিয়ে নিতে পারে। তাই রকমারি ঈশার চেহারা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে একবার দেখে নেওয়া যাক, পরে তত্ত্বজ্ঞান উদয় হলে সমন্বয়ের উপায় বেরিয়ে পড়তে পারে। শিক্ষানবীশকে এইটুকু সতর্ক করে দেওয়া দরকার, উপলব্ধি হবার আগেই বড়ো বড়ো জ্ঞানের কথা আওড়ালে চৈতন্য জাগার সাহায্য হয় না, উলটে তাকে ভুলিয়ে অসাড় করে রাখা হয়।
৯১