বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিশ্বমানবের লক্ষ্মীলাভ.djvu/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ঈশাসংকট

লাগে কিনা জানা নেই, ধর্মের কাজে যে লাগে না সেটুকু নিশ্চয়। এই রকম তপস্বীদের দেখলে মৌচাকের কথা মনে পড়ে।

 সে যাই হোক, মৌমাছি-জীবনের ঘানি যে-ঈশায় ঘোরায় তার আরো বড়ো কিছুর দিকে এগোবার রাস্তা দেখা যায় না। তবে পাশ্চাত্ত্য মানুষের চালাকির সঙ্গে পারা ভার। মৌমাছির আপন-ভোলা শ্রমকে সে নিজের ভোগে লাগাবার ফিকির বার করেছে। “বংশ বাড়াবি, সাধ হয়েছে?—বেশ তো, তার জন্যে গাছের গর্ত খুঁজে ঘুরে মরা কেন। দিব্যি কাঠের বাক্স তৈরি আছে, তাতে ব’সে যা, চাকে প্রাণ ভরে মধু আন্, ঝাঁকের পর ঝাঁক বার করতে চাস্ কোনো ভয় নেই, বাক্স মোজুদ আছে।” এই অভ্যর্থনায় খুশি হয়ে মৌমাছি বশ মেনে গেল, এক এক বাক্সে লাখো কর্মী জুটে আধমন একমন করে মধু জড়ো হতে লাগল, সে মধু কৌশল করে মানুষে বেমালুম বার করে নিয়ে তার বদলে গুড় ভরে দিলেও ঘানিঠেলা মদেমত্ত মধুকর দলের সে দিকে ভ্রূক্ষেপই নেই। এদিক থেকে দেখলে, মানুষের সঙ্গে বড়ো সমবায়ভুক্ত হওয়াটা মৌমাছির ভাগ্যে ঘটেছে বটে।

 পিঁপড়েদের জীবন বিচিত্র, সন্দেহ নেই। ওদের সংঘশক্তিকে সাত্ত্বিক বলা না যাক, চৌকস বলা চলে। ওদের শস্য ফলানো আছে, গো[] পালন আছে, সন্ধিবিগ্রহ আছে, বাচ্ছাদের প্রাণপণ যত্ন তো আছেই, তা ছাড়া শরণাপন্নকে আশ্রয় দেওয়া আছে, পরস্পরকে দান করাকরি আছে, এমন কি ওদের মধ্যে দাতাকর্ণের দল আছে যারা মিষ্টি

৯৯


  1. আমরা যে জীবকে গোরু বলি, তা অবশ্য পিঁপড়েরা পালন করে না। এক জাতের ছোটো পোকা আছে যারা গাছের মিষ্টিরস খেয়ে টেটুম্বুর হয়ে থাকে, পিঁপড়েরা যত্ন করে তাদিকে কাছাকাছি বসায়, তাদের গায়ে শুঁড় বুলিয়ে খোশামোদ করে সে রসবিন্দু আদায় করে নেয়।