পাতা:বিষবৃক্ষ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8t বিক্ষ ঐ। পত্রখানি দেখিতে পাই ? কমলমণি ঐশচন্দ্রের হাতে সূৰ্য্যমুখীর পত্ৰ দিয়া কছিলেন, “এই পড়। সূৰ্য্যমুখী তোমাকে এ সকল কথা বলিতে মানা করিয়াছে—কিন্তু যতক্ষণ তোমাকে সব না বলিতেছি, ততক্ষণ আমার প্রাণ খাবি খেতেছে । তোমাকে পত্র না পড়াইলে আহার নিদ্রা হইবে ন—ঘুরণী রোগই বা উপস্থিত হয়।” ঐীশচন্দ্র পত্র হস্তে লইয়া চিন্তা করিয়া বলিলেন, “যখন তোমাকে নিষেধ করিয়াছে, তখন আমি এ পত্র দেখিব না। কথাটা কি তা শুনিতেও চাহিব না। এখন করিতে হইবে কি, তাই বল।” ক। করতে হবে এই—সূৰ্য্যমুখীর বুদ্ধিটুকু গিয়াছে, তার একটু বুদ্ধি চাই। বুদ্ধি দেয় এমন লোক আর কে আছে—বুদ্ধি যা কিছু আছে, তা সতীশ বাবুর। তাই সতীশ বাবুকে একবার গোবিন্দপুর যেতে তার মামী লিখে পাঠিয়েছে। সতীশ বাবু ততক্ষণ একটা ফুলদানি ফুলসমেত উল্টাইয়া ফেলিয়ছিলেন, এবং তৎপরে দোয়াতের উপর নজর করিতেছিলেন। দেখিয়া ঐশচন্দ্ৰ কহিলেন, “উপযুক্ত বুদ্ধিদাতা বটে। তা যাহা হোক, এতক্ষণে বুঝিলাম—ভাজের বাড়ী মশায়ের নিমন্ত্রণ। সতীশকে যেতে হলেই সুতরাং কমলমণিও যাবে। তা সূৰ্য্যমুখীর কাণ কড়িটি না হারালে আর এমন কথা লিখবে কেন ?” ক। শুধু কি তাই ? সতীশের নিমন্ত্রণ ; আমার নিমন্ত্রণ আর তোমার নিমন্ত্রণ। ঐ । আমার নিমন্ত্রণ কেন ? ক। আমি বুঝি এক যাব ? আমাদের সঙ্গে গাড় গামছা নিয়ে যায় কে ? ঐ। এ সূৰ্য্যমুখীর বড় অন্যায়। শুধু গাড় গামছা বহিবার জন্য যদি ঠাকুরঙ্গমাইকে দরকার হয়, তবে আমি ছুদিনের জন্য একটা ঠাকুরজামাই দেখিয়ে দিতে পারি। কমলমণির বড় রাগ হইল। সে ভ্ৰকুটি করিল, শ্ৰীশকে ভেঙ্গাইল, এবং ঐশচন্দ্র যে কাগজখানায় লিখিতেছিল, তাই ছিড়িয়া ফেলিল। শ্ৰীশ হাসিয়া বলিল, “তা লাগতে এসো কেন ?” কমলমণি কৃত্রিম কোপসহকারে কহিল, “আমার খুলি, লাগবো।” শ্ৰীশচন্দ্রও কৃত্রিম কোপসহকারে কহিলেন, “আমার খুসি, বলবো।” তখন কোপযুক্ত কমলমণি ঐশকে একটি কিল দেখাইল। কুন্দন্তে অধর টিপিয়া ছোট হাতে একটি ছোট কিল দেখাইল । 将