পাতা:বিষবৃক্ষ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুৰ্বিবংশ পরিচ্ছেদ : অবতরণ ༠ཞི་ཤ། কুন্দ তখনও উত্তর করিতে পারিল না। সূৰ্য্যমুখী কুন্দের হাত ধরিলেন। বলিলেন, “কুন্দ ! এসো—দিদি এসো। আর আমি তোমায় কিছু বলিব না।” এই বলিয়া সূৰ্য্যমুখী হস্ত ধরিয়া কুন্দনন্দিনীকে অন্তঃপুর মধ্যে লইয়া গেলেন। চতুৰ্ব্বিংশ পরিচ্ছেদ অবতরণ সেই দিন রাত্রে দেবেন্দ্র দত্ত একাকী ছদ্মবেশে, সুরারঞ্জিত হইয়৷ কুন্দনন্দিনীর অমুসন্ধানে হীরার বাড়ীতে দর্শন দিলেন। এ ঘর ও ঘর খুজিয়া দেখিলেন, কুন্দ নাই। হীরা মুখে কাপড় দিয়া হাসিতে লাগিল। দেবেন্দ্র রুষ্ট হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “হাসিস কেন ?” হীরা বলিল, “তোমার ছুঃখ দেখে। পিজরার পার্থী পলাইয়াছে—আমার খানাতল্লাসী করিলে পাইবে না।” তখন দেবেন্দ্রের প্রশ্নে হীরা যাহা যাহা জানিত, আদ্যোপাস্ত কহিল । শেষে কহিল, “প্ৰভাতে তাহাকে না দেখিয়া অনেক খুজিলাম, খুজিতে খুজিতে বাবুদের বাড়ীতে দেখিলাম—এবার বড় আদর।” দেবেন্দ্র হতাশ্বাস হইয়। ফিরিয়া আসিতেছিলেন, কিন্তু মনের সন্দেহ মিটিল না । ইচ্ছ, আর একটু বসিয়া ভাবগতিক বুঝিয়া যান। আকাশে একটু কাণ মেঘ ছিল, দেখিয়া বলিলেন, “বুঝি বৃষ্টি এলো।” অনস্তর ইতস্ততঃ করিতে লাগিলেন। হীরার ইচ্ছ, দেবেন্দ্র একটু বসেন–কিন্তু সে স্ত্রীলোক—একাকিনী থাকে—তাহাতে রাত্রি—বসিতে বলিতে পারিল না । তাহ হইলে অধঃপাতের সোপানে আর এক পদ নামিতে হয়, তাহীও তাহার কপালে ছিল। দেবেন্দ্র বলিলেন, “তোমার ঘরে ছাতি আছে ?” হীরায় ঘরে ছাতি ছিল না। দেবেন্দ্র বলিলেন, “তোমার এখানে একটু বসিয়া জলট দেখিয়া গেলে কেহ কিছু মনে করিবে ?” হীরা বলিল, “মনে করিবে না কেন ? কিন্তু যাহা দোষ, আপনি রাত্রে আমার বাড়ী আসাতেই তাহা ঘটিয়াছে।” দে । তবে বসিতে পারি।