পাতা:বিষম বুদ্ধি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিষম বুদ্ধি।
৩৫

তাহা রসিক সর্ব্বদাই দেখিতে পায়। আমি যে সময় ঐ ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিলাম, সেই সময় ঐ জানালা বদ্ধ অবস্থাতেই ছিল। উহা খুলিয়াও দেখিলাম। ঘরের অবস্থা দেখিয়াও বিশেষ কিছুই বুঝিতে পারিলাম না যাহাতে রসিকের মৃত্যুর কারণ বিন্দুমাত্র নির্ণয় করিতে পারি। কিন্তু ঘরের অবস্থা দেখিয়া আমার বিশেষ সন্দেহ হইল যে, রাজচন্দ্র দাসের শয়ন-ঘরের ঐ জানালার সহিত রসিকের মৃত্যুর বিশেষরূপ সংশ্রব আছে। কিন্তু অনুসন্ধান করিয়া যখন এ সম্বন্ধে কোনরূপ প্রমাণ সংগ্রহ করিতে পারিলাম না, তখন কেবলমাত্র মনের সন্দেহে কি করা যাইতে পারে? আমার মনের সন্দেহ মনে রাখিয়াই ইহার অনুসন্ধান করিতে লাগিলাম। এইরূপে ঐ রাত্রি অতিবাহিত হইয়া গেল, অনুসন্ধানে বিশেষ কোনরূপ ফলই ফলিল না।

 পরদিবস মৃতদেহ পরীক্ষার নিমিত্ত প্রেরণ করা হইল। মৃতদেহ পরীক্ষা করিয়া ডাক্তার সাহেব তাঁহার অভিমত প্রকাশ করিলেন যে, “একটী প্রকাণ্ড লৌহপেরেক সজোরে হৃৎপিণ্ডের মধ্যে বিদ্ধ হওয়াতেই উহার মৃত্যু হইয়াছে।”

 ডাক্তার সাহেবের রিপোর্ট পাইয়া আমি উহা রাজচন্দ্র দাসকে দেখাইলাম, এবং তাঁহাকে বিশেষরূপে বুঝাইয়া তাঁহাকে সত্যকথা কহিতে কহিলাম। এখন দেখিলাম, রাজচন্দ্র দাস অন্য আর এক প্রকার ভাব অবলম্বন করিয়াছে, আমার কথাগুলি তিনি সবিশেষ মনোযোগের সহিত শুনিয়া পরিশেষে কহিলেন, “মহাশয়। আপনারা আমাকে যতই বুঝাইয়া বলুন না কেন, যাহা আমি অবগত নহি, সে সম্বন্ধে আমি কোন কথা আপনাদিগকে কিরূপে বলিব? আমি যাহা অবগত আছি, তাহা সমস্তই