পাতা:বিষম বুদ্ধি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিষম বুদ্ধি।
৪৩

যে দিবস উহারা এই কথা জানিতে পারিবে, সেই দিবস হইতে তাহার ঐ অতিরিক্ত বেতন বন্ধ হইবে। সে আমার কথায় সম্মত হইয়া তাহার নিজের কার্য্যসাধন করিতে লাগিল, আমিও মসে মাসে তাহাকে ৩ টাকা করিয়া অতিরিক্ত বেতন প্রদান করিতে লাগিলাম, ও মধ্যে মধ্যে রাত্রিকালে তাহার বাসায় গমন করিয়া রাজচন্দ্র দাসের বাড়ীর অবস্থা অবগত হইতে লাগিলাম। এইরূপে আরও ছয় মাস অতিবাহিত হইয়া গেল।

 পরিচারিকাটী অতিশয় চতুরা ছিল, একথা পূর্ব্বেই আমি বলিয়াছি; সে আমার আদেশমত রাজচন্দ্র দাসের স্ত্রীর এরূপ ভাবে পরিচর্য্যা করিতে লাগিল যে, তিনি ক্রমে ঐ পরিচারিকাকে প্রাণের সহিত ভালবাসিতে লাগিলেন। সুতরাং তাঁহার মনের কথা ক্রমে ঐ পরিচারিকার নিকট প্রকাশ করিতে লাগিলেন। এইরূপে যে দিবস যে সকল কথা ঐ পরিচারিকা অবগত হইতে লাগিল, তাহার সমস্তই আমার সাক্ষাৎ হইলেই আমাকে বলিতে লাগিল। আমিও উহাদিগের ঘরের কোন কোন কথা জানিয়া, লইবার মানসে ঐ পরিচারিকাকে দুই একটা কথা বলিয়া দিতে লাগিলাম; সেও সুযোগমত ঐ সকল বিষয় রাজচন্দ্র দাসের স্ত্রীর নিকট হইতে অবগত হইয়া আমাকে বলিয়া দিতে লাগিল। আমার আসল উদ্দেশ্যের কথা কিন্তু এখন পর্যন্ত আমি উহাকে বলি নাই, বাজে কথা লইয়াই আরো ছয় মাস অতিবাহিত হইয়া গেল। এইরূপে এক বৎসরকাল আমার নিকট হইতে মাসিক ৩ টাকা হিসাবে বেতন প্রাপ্ত হইবার পর, আমি একদিন আমার মনের কথার একটু আভাস তাহাকে প্রদান করিলাম, বলিয়া দিলাম, রাজচন্দ্র দাসের স্ত্রী এ সম্বন্ধে কি অবগত আছেন,