বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নারীর পত্ৰ दौझदtशद्ध भांब्रक रु 2ां९ বাঙালি স্ত্রীলোকের পক্ষে ইউরোপের যুদ্ধের বিষয় মতামত প্ৰকাশ করা যে নিতান্ত হাস্যকর জিনিস তা আমি বিলক্ষণ জানি, অথচ আমি যে সেই কাজ করতে উদ্যত হয়েছি তার কারণ, যখন অনেক গণ্যমান্য লোক এই যুদ্ধ-উপলক্ষে কথায় ও কাজে নিজেদের উপহাসাম্পদ করতে কুষ্ঠিত হচ্ছেন না, তখন নগণ্য আমরাই বা পিছপাও হব কেন। এ কথা শুনে হয়তো তোমরা বলবে, পুরুষের পক্ষে যা করা স্বাভাবিক মেয়ের পক্ষে তা নয়, অতএব পুরুষের অনুকরণ করা স্ত্রীলোকের পক্ষে অনধিকারচর্চা। পুরুষালিমেয়ে যে একটি অদ্ভুত জীব এ কথা আমরা মানি, কিন্তু মেয়েলি-পুরুষ যে তার চাইতেও বেশি অদ্ভুত জীব এ কথা যে তোমরা মানো না তার প্রমাণ তোমাদের কথায় '& ८ख कििञउJ °&न् । । সে যাই হোক, যুদ্ধসম্বন্ধে যে এ দেশে স্ত্রীপুরুষের কোনো অধিকারভেদ নেই সে তো প্ৰত্যক্ষ সত্য। যুদ্ধ তোমরাও কর না, আমরাও করি নে ; পল্টন তোমরাও দেখেছ, আমরাও দেখেছি ; কিন্তু যুদ্ধ তোমরাও দেখ নি, আমরাও দেখি নি। এ বিষয়ে যা কিছু জ্ঞান তোমরাও যেখান থেকে সংগ্ৰহ করেছি, আমরাও সেইখান থেকেই করেছি- অর্থাৎ ইতিহাস-নামক কেতাব থেকে। তবে আমাদের ইতিহাস হচ্ছে রামায়ণ-মহাভারত, আর তোমাদের ইংরেজি ও ফরাসি, ভাষা আলাদা হলেও দুইই শোনা কথা এবং সমান বিশ্বাস্য। লড়াই অবশ্য তোমরা কর, কিন্তু সে ঘরের ভিতর ও আমাদের সঙ্গে, এবং তাতেও জিত বরাবর যে তোমাদেরই হয় তা নয়। বরং সত্যকথা বলতে হলে, বাল্যবিবাহের দৌলতে বালিকা-বিদ্যালয়ের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাথা হেঁট করেই থাকতে হয়। সুতরাং ইউরোপের এই চতুরঙ্গ-খেলা সম্বন্ধে তোমরা যদি উপর চাল দিতে পাের, তবে আমরা যে কেন পারব না তা বোঝা শক্ত । কিন্তু ভয় নেই, আমি এ পত্রে কোনোরূপ অধিকার-বহিভূত কাজ করতে যাচ্ছি নে --অর্থাৎ তোমাদের মতো কোনো উপর-চাল দেব না ; কেননা, কেউ তা নেবে না। আমাদের মতের যে কোনো মূল্য নেই তা আমরা অস্বীকার করি নে; অপর পক্ষে আমাদের অমত যে মহামূল্য, তাও তোমরা অস্বীকার করতে পার না। আমরা তোমাদের মতে চলি, তোমরা আমাদের অমতে চল না। আমাদের 'না'র কাছে তোমাদের ‘ই’ নিত্য বাধা পায়। আসল কথা, এই অমতের বলে আমরা তোমাদের চালমাৎ করে রেখেছি।