বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নারীর পত্ৰ O Ο Σ মানুষ পশু হলেও যে হিংস্রপশু নয়, তার প্রমাণ তার দেহ। আমরা হাতে পায়ে মুখে মাথায় অস্ত্রশস্ত্র ধারণ করে ভূমিষ্ঠ হই নে, তোমরাও হও না। মানুষের অবশ্য নখদন্ত আছে, কিন্তু সে নখ ভালুকের নয় এবং সে দাঁত সাপের নয়। অনেকের অবশ্য মন্তকে গোজাতির মগজ আছে এবং অনেকের দেহে গণ্ডারের চর্ম আছে, কিন্তু তাই বলে এ অনুমান করা অসংগত হবে যে, আমাদের পূর্বপুরুষদের ললাটে শৃঙ্গ এবং নাসিকায় খড়গ ছিল। শুনতে পাই যে, আদিম মানবের বৃহৎ লাঙ্গুল ছিল, বর্তমানে ও অঙ্গটি অনাবশ্যকবিধায় সেটি আমাদের দেহভূত হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধ করাই যদি যথার্থ মানবধর্ম হয় তা হলে পুরুষ-মানুষের, অন্তত বীর-পুরুষের, মাথার শিং এবং নাকের খাড়া খসে পড়বার কোনো কারণ ছিল না।” মানুষের কেবল একটিমাত্র ভগবদত্ত মহাস্ত্ৰ আছেসেটি হচ্ছে রসনা। সুতরাং মানুষের যুদ্ধ-প্রবৃত্তি ঐ অন্ত্রের সাহায্যেই করা তার পক্ষে স্বাভাবিক এবং কর্তব্য । তার পর, মানুষ যে আত্মহত্যা করবার জন্য এ পৃথিবীতে আসে নি, তার প্রমাণ মানুষের সকল কাজ, সকল যত্ন, সকল পরিশ্রমের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে জীবনধারণ করা। ঐ এক মূল-প্রবৃত্তি হতে মানুষের শুধু সকল কর্মের নয়, সকল ধর্মেরও উৎপত্তি। ইহজীবনের পরিমিত সীমা অতিক্রম করবার অদম্য প্ৰবৃত্তি থেকেই মানুষে দেহাতিরিক্ত আত্মা এবং ইহলোকাতিরিক্ত পরলোকের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেছে। এই কারণে, যে কর্মের দ্বারা জীবনরক্ষা সিদ্ধ হয় তাই মানবের নিকট যথার্থ কর্তব্যকর্ম এবং যে ধর্মের চর্চায় আত্মার অমরত্ব সিদ্ধ হয় তাই মানবের নিকট গ্রাহাধৰ্ম। তোমাদের মস্তিষ্কপ্রন্থত দৰ্শনবিজ্ঞান হাজার প্রমাণাভাব দেখালেও মানুষের মন থেকে যে ধর্মবিশ্বাস দূর হয় না তার কারণ মস্তিষ্ক মজার বিকারমাত্ৰ, মজা মস্তিষ্কের বিকার নয়। এবং বাঁচবার ইচ্ছা! মানুষের মজাগত। মানুষের কাছে সব জিনিসের চাইতে প্ৰাণের মূল্য অধিক বলেই প্ৰাণবধ-করাটাই মানবসমাজে সবচাইতে বড়ো পাপ বলে গণ্য। এই কারণেই ‘অহিংসা পরমধর্ম'- এই বাক্যটিই ধর্মের প্রথম না হোক, শেষ কথা। এই কথাটি সত্য বলে গ্ৰাহ করে নিলে যুদ্ধের সপক্ষে বলবার আৱ-কোনো কথাই থাকে DD S BDB KBB BDBBB DD BD DD KE D BD DBBB DBDDBDD DBD DBBBBB DD করা যে কী করে ধর্ম হতে পারে তা আমাদের ক্ষুদ্র বুদ্ধির অগম্য। যে গণিতশাস্ত্রের সাহায্যে অসংখ্য অকর্তব্যকে যোগ দিয়ে একটি মহৎ কর্তব্যে পরিণত করা হয় সে শান্ত্রি আমাদের জানা নেই। যুদ্ধের মূল যে হিংসা এবং বীরত্ব যে হিংস্রতার নামান্তরমাত্র, সে বিষয়ে অন্ধ থাকা कमि।