পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

à è 9 বীরবলের হালখাতা বিজান মানুষকে মারতে শেখালেও মরতে শেখাতে পাৱে না। এইজন্যই দর্শনের আবশ্যক। মানুষে সহজে দেহ-পিঞ্জর থেকে আত্মা-পাখিটিকে মুক্তি দিতে চায় না ; কেননা, ভবিষ্যতে তার গতি কী হবে সে বিষয়ে সকলেই অজ্ঞ। আত্মার সঙ্গে বর্তমানে আমাদের সকলেরই পরিচয় আছে এবং তার ভবিষ্যৎ-অস্তিত্বের আশা আমরা সকলেই পোষণ করি। এর বেশি আমরা আর-কিছুই জানি নে। অপর পক্ষে, দার্শনিকেরা আত্মার ভূত-ভবিষ্যতের সকল খবরই জানেন। সুতরাং অমরত্বের আশাকে বিশ্বাসে পরিণত কৱবাৱ ভাৱ তাদের হাতে। এবং তারাও তাদের কর্তব্যপালন করতে কখনো পশ্চাৎপদ হন নি। যুদ্ধের মুখ্য উদ্দেশ্য অবশ্য মারা, মরা নয় ; তবে হত্যা করতে গেলে হত হবার সম্ভাবনা আছে ব’লে দার্শনিকেরা এই সত্য আবিষ্কার করেছেন যে, যুদ্ধক্ষেত্রে দেহত্যাগ করলে আত্মা একলম্বেফ স্বৰ্গারোহণ করে এবং সে দেশে উপস্থিত হওয়ামাত্র এত ভোগবিলাসের অধিকারী হয় যে, তা এ পৃথিবীর রাজরাজেশ্বরেরও কল্পনার অতীত। কিন্তু অধ্রুব ইন্দ্রের ইন্দ্ৰত্বের লোভে ধ্রুব ত্যাগ করা সকলের পক্ষে স্বাভাবিক নয়। সকাল-সকাল স্বৰ্গপ্ৰাপ্তির সম্বন্ধে যোদ্ধাদের তাদৃশ্য উৎসাহ না থাকায়, তাদের উৎসাহ-বর্ধনের জন্য সঙ্গে সঙ্গে নরকেরও ভয় দেখানো হয়। কিন্তু তাতেও যদি ফল না হয় তো সেনাপতিরা যুদ্ধ-পরাজুখি সৈনিকদের বধ করতে পারেন, এ বিষয়েও দার্শনিক বিধি আছে। অর্থাৎ মৃত্যুভয় দেখিয়ে মানুষকে মৃত্যুর জন্য প্ৰস্তুত করতে হয় । দুৰ্ভাগ্যবশত অত কাচা ওষুধ সকলের ধরে না। পৃথিবীতে এমন লোক দুর্লভ BDS DB DDDB BBBDBD sBSLDB BDYSKBB BDDLDDLD BBSDBB BDLuDLDD DDDS এদের যুদ্ধে প্ৰবৃত্ত করাবার উপযোগী দর্শনও আছে। যারা নিজের স্বার্থের জন্য পরের ক্ষতি করতে প্ৰস্তুত নন, তঁদের নিঃস্বার্থতার দিক দিয়ে বাগাতে হয়। যিনি মৰ্তরাজ্য কি স্বৰ্গরাজ্য কোনো রাজ্যই কামনা করেন না, তাকে নিষ্কাম হত্যা করবার উপদেশ দেওয়া হয়। হতা। পাপ নয়, কারণ ও একটি কর্ম। কর্ম করাই ধর্ম, তার ফল কামনা করাই অধৰ্ম। হত্যা করা যে পাপ এ ভ্ৰান্তি শুধু তাদেরই হয় যারা আত্মার ভূত-ভবিষ্যতের বিষয় অজ্ঞ। আত্মা যখন অবিনশ্বর তখন কেউ কাউকে বধ করতে পারে না। দেহ আত্মার বসনমাত্র। সুতরাং প্রাণবধ করার অর্থ আত্মাকে পুরনো কাপড় ছাড়িয়ে নূতন কাপড় পরানো। অপরকে নূতন বস্ত্ৰ দান করা যে পুণ্যকাৰ্য সে তো সর্ববাদিসম্মত। মানুষ যদি তার ক্ষুদ্র হৃদয়দৌর্বল্য অতিক্রম ক’রে নিজের অমরত্ব অর্থাৎ দেবত্ব অনুভব করে, তা হলে নিম্বফল হত্যা করতে তার আরকোনো দ্বিধা হবে না। অপরকে বধ করবার সুফলটি নিজে ভোগ না করলেও