কনগ্রেসের আইডিয়াল S 8V মতই সমান অগ্ৰাহ করেন ; কেননা, এই দুয়ের মধ্যস্থ দল হচ্ছে কনগ্রেস। এ মতে শুদ্ধ-স্বরাজ্য সম্বন্ধে এইরূপ মতভেদ হতে পারে, কিন্তু ‘সাম্রাজ্যের ভিতর স্বরাজ্য” -সম্বন্ধে হতে পারে না। কেননা, সাম্রাজ্যের ভিতর স্বরাজ্য যে খাপ খাওয়ানো যেতে পারে, তার উদাহরণ ক্যানাডা অষ্ট্রেলিয়া সাউথ-আফ্রিকা প্ৰভৃতি। সুতরাং যার এত নজির আছে, সেই আদর্শের পক্ষে ওকালতি করায় বাধা নেই ; অতএব এ আদর্শ বিদ্যাসংগীতও বটে, বুদ্ধিসংগীতও বটে, কেননা, যদি বর্তমানের উপাদান নিয়ে ভবিষ্যতের মূর্তি গড়তে হয়, তা হলে এ ছাড়া অন্য-কোনো আদর্শ হতে পারে না। তবে এই আদর্শকে বিপক্ষ-পক্ষ হেসে এই প্রশ্ন করেন যে ‘তুমি কোন গগনের ফুল, তুমি কোন বামনের চাদ” এর উত্তরে স্বয়ং প্ৰশ্নকর্তাই বলেন যে, আদর্শ ইংরেজি-শিক্ষিত ভারতবর্ষের চিদআকাশের ফুল এবং ইংরেজি-শিক্ষিত ভারতবর্ষের অমাবস্যার চাঁদ। এ কথা শুনে কনগ্রেস বলেন, এ ভবিষ্যতের আদর্শ এবং সে ভবিষ্যৎও এত দূৰ্বভবিষ্যৎ যে, বর্তমানের ধুলো র্যাদের চোখে ঢুকেছে, সেই-সকল অন্ধলোকেই এর সাক্ষাৎ পান না বলে এর অস্তিত্বেও বিশ্বাস করেন না। এ আদর্শ ভারতবর্ষের কল্পনার ধন। এ তো হাতে নাগাল পাবার জিনিস নয়, মনশ্চক্ষে দূরবীন ক’যে এ আদর্শ দেখতে হয়। কনগ্রেসের সকল বাণীই যে ভবিষ্যদবাণী, এ জ্ঞান থাকলে বিপক্ষ-পক্ষ কনগ্রেসের কথা শুনে আর হাসত না । ভবিষ্যতে কী হতে পারে। আর না হতে পারে, সে বিষয়ে ত্রিকালজ্ঞ স্বয়ং ভগবান ছাড়া আর কেউ কিছু বলতে পারেন না। সুতরাং দূৱ-ভবিষ্যতে যে ঐ আদর্শচাদ ভারতবাসীর হাতে আসবে না এবং তাদের মাথায় ঐ আকাশকুসুমের পুষ্পবৃষ্টি হবে না- এ কথা জোর করে কে বলতে পারে। তবে এখন ঐ চাদকে ডেকে ‘আয় আয় আমাদের মাথায় টী দিয়ে যা, আর ঐ আকাশকুসুমকে ডেকে “যেখানে আছ সেইখানে থাকে, দেখো যেন ঝরে আমাদের গায়ে পোড়ো না- এ কথা বলা ছাড়া আমাদের উপায়ান্তর নেই। কেননা, বেশি আলোয় আমাদের চোখ বলসে যায়, আর আমরা ফুলের ঘায়ে মূৰ্ছা যাই। তবে কথা হচ্ছে এই যে, বর্তমানকে আমরা একেবারেই উপেক্ষা করতে পারি নে, কেননা এ পৃথিবীর সঙ্গে আমাদের যা সম্বন্ধ তা বর্তমানেরই সম্বন্ধ। ‘চোখ বুজলেই অন্ধকার’- এ প্ৰবাদ তো সকলেই জানেন । সুতরাং আমাদের খোলা চোখের জন্যও একটা আদর্শ থাকা দরকার। আমরা চাই সেই ফুল, যার দ্বারা মা’র নিত্যপূজা