পত্র ২ শ্ৰীযুক্ত ‘সবুজ পত্র’সম্পাদকমহাশয় সমীপেযু সম্প্রতি শ্ৰীযুক্ত রামেন্দ্রসুন্দর ত্ৰিবেদী মহাশয় আবিষ্কাব করেছেন যে, এ দেশে মাসিকপত্রের পরমায়ু গড়ে চার বৎসর। ত্ৰিবেদীমহাশয় বাংলার একজন অগ্রগণ্য আয়ুৰ্বেদী, ইংরেজিতে যাকে বলে বায়োলজিস্ট- অতএব আয়ু সম্বন্ধে তার গণনা যে নিভুল, এ কথা আমরা মেনে बिड बांक्षJ । এই হিসেবে সবুজ পত্রের জীবনের মেয়াদ আরো দু বৎসর আছে। এ স্থলে বিধির নিয়ম লঙ্ঘন করা অকর্তব্য মনে করেই সম্ভবত আপনারা সবুজ পত্রের পূর্বনির্দিষ্ট মেয়াদ বাড়িয়ে দেবার জন্য কৃতসংকল্প হয়েছেন। এ পত্ৰ যে দু বৎসরের কড়ারে বার করা হয়, সে বিষয়ে আমি সাক্ষি দিতে পারি। কেননা, যে ক্ষেত্রে সবুজ পত্র প্রকাশ করবার যড়যন্ত্র করা হয়- মনে রাখবেন হাল আইনে দুজনেও ষড়যন্ত্র হয়— সে ক্ষেত্রে আমি সশরীরে উপস্থিত ছিলুম। সবুজ পত্র আর-এক বৎসর সবুজ থাকবে, এ সংবাদে পাঠকসমাজ খুশি হবেন কি না জানি নে, কিন্তু সমালোচকসম্প্রদায় যে হবেন না- সে বিষয়ে আর সন্দেহ নেই। কেননা, এরা ও-পত্রের রঙ কিংবা রস, দুয়ের কোনোটিই পছন্দ করেন না। এদের মতে সবুজ পত্ৰ সাহিত্যের তেজপত্র, যতক্ষণ না তার রঙ ও রস দুইই লোপ পায় অর্থাৎ যতক্ষণ না তা শুকিয়ে যায়, ততক্ষণ তা বাঙালি পুরুষের মুখরোচকও হবে না, বঙ্গরমণীর গৃহস্থালির কাজেও লাগবে না। সবুজ পত্র তেজপত্র কি না জানি নে- কিন্তু তা যে নিস্তেজ পত্র নয়, তার প্রমাণ উত্তেজিত সমালোচনায় নিত্যই °i&श शाशू । এ ক্ষেত্রে যদি কেউ জিজ্ঞাসা করেন যে, সবুজপত্রের বেঁচে থাকবার কিংবা ও-পত্ৰকে বঁচিয়ে রাখবার আবশ্যকতাই বা কী আর সার্থকতাই বা কোথায়, তা হলে তার কোনো উত্তর দেবেন না। কেননা, ও প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। এ পৃথিবীতে বাঁচবার এবং বঁচিয়ে রাখবার পক্ষে কোনোরূপ যুক্তি নেই ; অপর পক্ষে মরবার এবং মারবার পক্ষে এত বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক যুক্তি আছে যে, তার ইয়ত্ত করা যায় না। পৃথিবীর সকল দেশের সকল শাস্ত্ৰই মানুষকে মরবার জন্য প্ৰস্তুত হতে শিক্ষা দেয় ; যে চিন্তার উপর মৃত্যুর ছায়া পড়ে নি, তাকে আমরা গভীরও বলি নে, উচ্চও বলি নে। এ জড়বিশ্বের অন্তরে প্রাণ-জিনিসটি প্ৰক্ষিপ্ত। দৰ্শন O
পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৪৩
অবয়ব