পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SV বীরবলের হালখাতা আর আমল দেবেন না, সে বিষয়ে আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই। আমাদের সাহিত্য • থেকেই প্ৰমাণ পাওয়া যায় যে, একবার যুক্তাক্ষর শিখলে আমরা অযুক্তাক্ষরের ব্যবহার যুক্তিযুক্ত মনে করি নে এবং অপর-কেউ করতে গেলে অমনি বলে উঠি, সাহিত্যের সর্বনাশ হল, ভাষাটা একদম অসাধু এবং অশুদ্ধ হয়ে গেল। তবে সংগীতে এ বিপদ ঘটবার বিশেষ সম্ভাবনা নেই। সেদিন “ একজন ইংরেজ বলছিলেন যে, যে সংগীতে ছয়টি রাগ এবং প্রতি রাগের ছয়টি করে স্ত্রা আছে, সেখানে হারমনি কী করে থাকতে পারে। আমি বলি, ও তো ঠিকই কথা, বিশেষত স্বামী যখন মূর্তিমান রাগ আর স্ত্রীরা প্ৰত্যেকেই এক-একটি মূর্তিমতী রাগিণী। অবশ্য এরূপ হবার কারণ আমাদের সংগীতের কৌলীন্য। আমাদের রাগসকল যদি কুলীন না হত, তা হলেও আমরা হারমনির চর্চা করতে পারতুম না ; কেননা, ও-বস্তু আমাদের ধাতে নেই। আমাদের সমাজের মতো আমাদের সংগীতেও জাতিভেদ আছে, আর তার কেউ আরকারে সঙ্গে মিশ্রিত হতে পারে না। মিশ্রিত হওয়া দূরে থাক, আমরা পরস্পর পরস্পরকে স্পর্শ করতে ভয় পাই ; কেননা, জাতির ধর্মই হচ্ছে জাত বঁচিয়ে মারা । আর মিলে-মিশে এক হয়ে যাবার নামই হচ্ছে হারমনি । পৌষ ১৩২৩