রূপের কথা Sea হয়ে গিয়েছে। সত্যকথা এই যে, মানবসমাজের পক্ষে রূপজজ্ঞান লাভ করাই সাধনাসাপেক্ষ- খোয়ানো সহজ। আমাদের পূর্বপুরুষদের সাধনার সেই বঞ্চিত ধন আমরা অবহে লাক্রমে হারিয়ে বসেছি। বিলেতি সভ্যতার কেজো অংশের সংস্পর্শে আমাদেৱ মনের ভিত টলুক আর নাটলুক, তার চুড়া ভেঙে পড়েছে। এ বিষয়ে বৌদ্ধদৰ্শনের মত প্ৰণিধানযোগ্য। বৌদ্ধদার্শনিকের কল্পনা করেন যে, এ জগতে নানা লোক আছে। সব নীচে কামলোক, তার উপরে রূপলোক, তার উপরে ধ্যানিলোক ইত্যাদি । আমার ধারণা, আমির-সব জন্মত কামলোকের অধিবাসী ; সুতরাং রূপলোকে যাওয়ার অর্থ আত্মার পক্ষে ওঠা, নাম নয়। আর-এক কথা, রূপের চর্চার বিরুদ্ধে প্ৰধান আপত্তি এই যে, আমরা দরিদ্র জাতিঅতএব ও আমাদের সাধনার ধন নয়। এ ধারণার কারণ, ইউরোপের কমাশিয়ালিজম আমাদের মনের উপর এ যুগে রাজার মতো প্ৰভুত্ব করছে। সত্যকথা এই যে, জাতীয়শ্ৰীহীনতার কারণ অর্থের অভাব নয়, মনের দারিদ্র্য। তার প্রমাণ, আমাদের হলিফ্যাশা নের বেশভূষা সাজসজ্জা আচার-অনুষ্ঠানের শ্ৰীহীনতা সোনার-জলে ছাপানো বিয়ের কবিতার মতো আমাদের ধনীসমাজেই বিশেষ করে ফুটে উঠেছে। আসল কথা, আমাদের নবশিক্ষার বৈজ্ঞানিক আলোক আমাদের জ্ঞাননেত্ৰ উন্মীলিত করুক। আর নাই- কারুক, আমাদের রূপকানা করেছে । ‘গুণ হয়ে দোষ হল বিদ্যার বিদ্যায়’- ভারত চন্দ্রের এ কথা সুন্দরের দিক থেকে দেখলে দেখা যাবে, আমাদের সকলের পক্ষেই সমান খাটে। আর যদি এই কথাই সত্য হয় যে, আমরা সুন্দরভাবে বঁাচতে পারি নেতা হলে আমাদের সুন্দরভাবে মরাই শ্রেয়। তাতে পৃথিবীর কারো কোনো ক্ষতি হবে না, এমন-কি, আমাদেরও নয় । iन्म ७७२७ )R
পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৭৫
অবয়ব