পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মলাটি-সমালোচনা R 3 এখন সমালোচনা শুরু করে দেবার পূর্বেই কথাটার একটু আলোচনা করা দরকার } কারণ, ঐ শব্দটি আমরা ঠিক অর্থে ব্যবহার করি কি না, সে বিষয়ে আমার একটু সন্দেহ আছে। প্ৰথমেই, সম-উপসর্গটির যে বিশেষ-কোনো সার্থকতা আছে, এরূপ আমার বিশ্বাস নয়। শব্দ অতিকায় হলে যে তার গৌরব-বৃদ্ধি হয়, এ কথা আমি মানি ; কিন্তু দেহভারের সঙ্গে সঙ্গে যে বাক্যের অর্থাভার বেড়ে যায়, তার কোনো বিশেষ প্ৰমাণ পাওয়া যায় না। এ যুগের লেখকের মাতৃভাষায় লিখেই সন্তুষ্ট থাকেন না, কিন্তু সেইসঙ্গে মায়ের দেহাপুষ্টি করাও তাদের কর্তব্য বলে মনে করেন। কিন্তু, সে পুষ্টিসাধনের জন্য বহুসংখ্যক অর্থপূর্ণ ছোটো-ছোটাে কথা চাই, যা সহজেই বঙ্গভাষার অঙ্গীভূত হতে পারে। স্বল্পসংখ্যক এবং কতকাংশে নিরর্থক বড়ো বড়ো কথার সাহায্যে সে উদ্দেশ্যসিদ্ধি হবে না । সংস্কৃতভাষার সঙ্গে আমার পরিচয় অতি সামান্য ; কিন্তু সেই স্বল্প পরিচয়েই আমার এইটুকু জ্ঞান জন্মেছে যে, সে ভাষার বাক্যাবলী আয়ত্ত করা নিতান্ত কঠিন। সংস্কৃতের উপর হস্তক্ষেপ করবামাত্রই তা আমাদের হস্তগত হয় না। বরং আমাদের অশিক্ষিত হাতে পড়ে প্ৰায়ই তার অর্থবিকৃতি ঘটে। সংস্কৃতসাহিত্যে গোজামিলন-দেওয়া-জিনিসটা একেবারেই প্ৰচলিত ছিল না। কবি হােন, দার্শনিক হোন, আমাদের পূর্বপুরুষরা প্ৰত্যেক কথাটি ওজন করে ব্যবহার করতেন। শব্দের কোনোরূপ অসংগত প্ৰয়োগ সেকালে অমার্জনীয় দোষ বলে গণ্য হত। কিন্তু একালে আমরা কথার সংখ্যা নিয়েই ব্যস্ত, তার ওজনের ধার বড়ো-একটা ধারি নে। নিজের ভাষাই যখন আমরা সূক্ষ্ম অর্থ বিচার করে ব্যবহার করি নে, তখন স্বল্পপরিচিত এবং অনায়ত্ত সংস্কৃত শব্দের অর্থ বিচার করে ব্যবহার করতে গেলে সে ব্যবহার যে বন্ধ হবার উপক্রম হয়, তা আমি জানি। তবুও একেবারে বেপরোয়াভাবে সংস্কৃত শব্দের অতিরিক্ত-ব্যবহারের আমি পক্ষপাতী নই। তাতে মনোভাবও স্পষ্ট করে ব্যক্ত করা যায় না, এবং ভাষাও ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। উদাহরণস্বরূপে দেখানো যেতে পারে, এই 'সমালোচনা’-কথাটা আমরা যে অর্থে ব্যবহার করি, তার আসল অর্থ ঠিক তা নয়। আমরা কথায় বলি লেখাপড়া” শিখি ; কিন্তু আসলে আমরা অধিকাংশ শিক্ষিত লোক শুধু পড়তেই শিখি, লিখতে শিখি নে। পাঠকমাত্রেরই পাঠ্য কিংবা অপাঠ্য পুস্তক সম্বন্ধে মতামত গড়ে তোেলবার। ক্ষমতা থাক। আর না থাক, মতামত ব্যক্ত করবার অধিকার আছে; বিশেষত সে কার্যের DBBBD SDDDD DDSBBDYBDBD DB BBBSDBBSBB DDSS DDDS DBBBDBD বিষয়ের বাংলাসাহিত্যে অভাব থাকলেও সমালোচনার কোনো অভাব নেই। এই সমালোচনা-বন্যার ভিতর থেকে একখানিমাত্র বই উপরে ভেসে উঠেছে। সে হচ্ছে শ্ৰীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আলোচনা”। তিনি যদি উক্ত নামের পরিবর্তে তার