বীরবিলোৱা হালখাতা জান যে আমাদের হয়েছে তার প্রমাণ বাংলাসাহিত্যের কতকগুলি নতুন কথায় offe যায়। ব্যক্তির সঙ্গে সমাজের অঙ্গাঙ্গী সম্বন্ধের কথা, জাতীয় আত্মজ্ঞানের কথা, আজকাল বক্তাদের ও লেখকদের প্রধান সম্বল। অথচ এ কথাও অস্বীকার করবার জো নেই যে, এত বলা-কওয়া সত্ত্বেও এই অঙ্গাঙ্গী ভাব পরস্পরের গলাগলি ভাবে পরিণত হয় নি; আর জাতীয় আত্মজ্ঞান শুধু জাতীয় অহংকারে পরিণত হচ্ছে, যদিচ অহংজ্ঞানই আত্মজ্ঞানের প্রধান শত্রু। জাতীয় কর্তব্য বুদ্ধি অনেকের মনে জাগ্ৰত হলেও জাতীয় কর্তব্য যে সকলে করেন না, তার কারণ, পরের জন্য কিছু করবার দিন আমরা নিত্যই পিছিয়ে দিই। আমাদের অনেকের চেষ্টা হচ্ছে- প্ৰথমে নিজের জন্য সব করা, পরে অপরের জন্য কিছু করা। সুতরাং জাতীয় কর্তব্যটুকু আর ‘ইতিমধ্যে’ করা হয় না। ফলে ‘আপনি বঁাচলে বাপের নাম, এই পুরনো কথার উপর আমরা নিজের কর্মজীবন প্ৰতিষ্ঠা করি, আর ‘জাত বঁচিলে ছেলের নাম,’’ এইরকম একটা কোনো বিশ্বাসের বলে জাতীয় কর্তব্যের ভারটা, এখন যারা ছেলে এবং পরে যারা মানুষ হবে, তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিই। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে যে, যা-কিছু করতে হবে, তা ‘ইতিমধ্যে’ই করতে হবে। সম্পাদকমহাশয়েরা, লেখক নয়, পাঠকদের যদি এই সত্যটি উপলব্ধি করাতে পারেন, তা হলে তঁদের সকল আজ্ঞা আমরা পালন করতে প্ৰস্তুত আছি। জ্যৈষ্ঠ & R )
পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৯০
অবয়ব