বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বুড়ো আংলা-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

করছিলে?” রিদয়ের মুখে ইঁদুরের খবর শুনে তাঁরা বলে উঠলেন—“ওমা, এই দরবার করতে এসেছ তা বলতে হয়, ওই আমাদের কুমোর-বৌ কর্তার যে মূর্তিগুলো গড়ে-গড়ে ভটচায্যি মশায়ের হাতে দিয়ে লোকের ঘরেঘরে বিক্রি করতে পাঠায়, সেই গণেশের তুমি বুঝি সন্ধান করছ? ওই দরোয়ানজীকে বল সে তোমাকে সেই গণেশের দোকান দেখিয়ে দেবে।”

 রিদয় কলাবৌদের পেন্নাম করে আবার দেউড়িতে এসে দরোয়ানজীর সঙ্গে আর একটা ঘুপসী ঘরে গিয়ে দেখলে, দোকানঘরের এক-এক কুলুঙ্গীতে এক-এক রকম গণেশ—গোবর-গণেশ তিনি কলম হাতে পুঁথি লিখছেন, সিদ্ধিদাতা-গণেশ তিনি এক ধামা দিল্লীর লাড্ডু নিয়ে বসেছেন, মাড়োয়ারি-পটির টঙ্ক-গণেশ বসে-বসে খালি আকাশে আঁকশি দিচ্ছেন, হেড়ম্ব-গণেশ তিনি খুব আড়ম্বর করে ঢোল পিটছেন।

 রিদয় ঢিপ করে তাঁকে নমস্কার করে বললে—“গণেশদাদা, চিন্তে পারেন?” হেড়ম্ব রিদয়ের কথার জবাব দিলেন সমস্কৃত দেবভাষায়—“বুং।” রিদয় ভাবলে এ তো মুশকিল, যদি বা কত কষ্টে এসে ধরলেম, এখন কথা না বুঝলে উপায়? সে একবার ইঁদুরের দিকে, একবার ঢোলকের দিকে, একবার নিজের দিকে আঙুল নেড়ে ইশারায় বোঝালে ঢোলকটা চাই। গণেশ ঢোলকটা রিদয়কে দিয়ে এদিক-ওদিক শুঁড় নেড়ে কি বললেন বোঝা গেল না। রিদয় শুধু শুনলে—“বুং চটাপট্ ত্বং কং করং বাদনং পুনস্তম্ ব্যস্তম্ নাদম্ কুণ্ডমকুলম পৌউন্‌ড্রবর্দ্ধনম্ গণ্ডস্থলম্ আগচ্ছতু।”

 রিদয় গণেশের মুখ দেখে বুঝলে তিনি খুব খুশি হয়েছেন। সে অমনি আচার্যি পুরুতকে দুর্গোপুজোয় শ্রাদ্ধে শান্তিতে যেমন করে সব মন্তর আওড়াতে শুনেছিল ঠিক তারি নকলে বললে—“হুঁং ভূত স্বাহা, কুরু-কুরু কুণ্ডলিনী নমোঃ আসিতো দেবল গৃহ্যং কুরু তুভ্যং হং যংছট ফট ব্রহ্মবিদ্যা

১৫৭