“আচ্ছা দেখ দেখি গয়লাবাড়ি কিনা”:
গোয়াল ঘরে দিচ্ছে হামা নেহাল বাছুর
ঘোল মউনি বলছে ঘরে গাবুর গুবুর
ভালো দুধ টোকো দই দিচ্ছে সেথা বাস
মোষ দিচ্ছে নাক ঝাড়া গরু চিবায় ঘাস।
রিদয় পুবদিকে নাক তুলে বললে—“এসব কিছুই নেই এখানে!”
নেউল পশ্চিম দিকে শুঁকে-শুঁকে বললে—“যেন ভিজে ঘাসের গন্ধ পাচ্ছি!”
খটাস উত্তর-দক্ষিণ পুর্ব-পশ্চিম চারদিকে কান পেতে নাক ঘুরিয়ে বললে—“এটা গয়লাবাড়ি বটে, কিন্তু তেমন গোঁড়া গয়লা নয়, শব্দ আর গন্ধগুলো কেমন ফিকে-ফিকে ঠেকছে, বিচিলী আছে, ঘাসও কিছু আছে, গরুও একটা যেন আছে বোধ হচ্ছে।”
ঠিক সেই সময় বুদিগাই “ওমঃ” বলে একবার ডাক দিলে! তিন পথিক তাড়াতাড়ি সেই দিকে গিয়ে দেখলে—কত কালের পুরোনো চালাখানা তার ঠিক নেই, বিষ্টির জলে মাটির দেওয়াল গলে গিয়ে বুড়ো মানুষের পাঁজরের হাড়গুলোর মতো ভিতরের চাঁচ আর খোঁটাখুঁটি বেরিয়ে পড়েছে, দরজায় একটা ঝাঁপ খুলে মাটিতে শুয়ে পড়েছে, আর একটা পচা দড়ি ধরে পড়ো-পড়ো হয়ে এখনো ঝুলে রয়েছে! চালের খড় এখানে-ওখানে উড়ে গিয়ে ভিতর থেকে ঘুণ-ধরা বাঁশের আড়া দু-চারটে ফোগলা দাঁতের মতো দেখা যাচ্ছে!
তিন পথিকের পায়ের শব্দ পেয়ে গোয়ালের মধ্যে থেকে বুদি ভাবলে গয়লাবুড়ি তার জাব নিয়ে এল—সে দরজা থেকে মুখটা বাড়িয়ে এদিক-ওদিক দেখে বললে—“মাগোঃ মাঃ, রাত হল আজ কি খেতে দিবিনে!”
১৭৩