হইয়া থাকে, যাঁহাদের মঙ্গলবুদ্ধি কখনো সাম্প্রদায়িক সংকীর্ণতাকে স্বীকার করে নাই, তাঁহারা সাম্প্রদায়িক গণ্ডী অতিক্রম করিয়া এমন এক উদার রাজবর্ত্মে দাঁড়াইয়া মানুষকে আহ্বান করেন যে, সেখানে আসিয়া তাঁহাদের সহিত সম্মিলিত হইতে কোনো দেশের কোনো কালের মানুষ সঙ্কোচ বোধ করে না।
সার্দ্ধ দ্বিসহস্র বৎসর পূর্ব্বে ভগবান্ বুদ্ধদেব মুক্তির এমনি একটি উদার রাজপথে বিশ্বের সকল মানবকে আহ্বান করিয়াছিলেন; সেখানে সমবেত হইতে কোনো মানুষের চিত্ত বাধাপ্রাপ্ত হইতে পারে না। তিনি তাঁহার অনুগামী শিষ্যদিগকে বলিয়াছেন— গঙ্গা যমুনা প্রভৃতি বড় বড় নদী নানা দিগ্দেশ হইতে উৎপন্ন হইয়াও, যেমন সমুদ্রে মিলিয়া আপনাদের স্বতন্ত্র সত্তা ও নাম হারাইয়া ফেলে, তেমনি ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বৈশ্য শূদ্র প্রভৃতি সকলজাতীয় মানব সত্যধর্ম্ম গ্রহণ করিবামাত্র তাহাদের জাতি ও গোত্র হারাইয়া থাকে। ক্ষৌরকার উপালি হীনজাতি হইয়াও মহাপুরুষ বুদ্ধের দক্ষিণহস্ত হইলেন; নবধর্ম্মের মহিমায় তিনি আর শূদ্র রহিলেন না, তিনি পরম সাধু, অর্হৎ এবং সত্যধর্ম্মের ব্যাখ্যাতা হইয়া পরম সম্মান লাভ করিলেন।
বুদ্ধের বাণী এক সময়ে ভারতীয় পতিতদিগের কর্ণে অভয়মন্ত্র শুনাইয়াছে এবং তাঁহার প্রচারিত ধর্ম্ম তাহাদিগকে আশ্রয় দান করিয়াছিল, ইহা নিঃসন্দেহ। থেরগাথায় একজন থের নিজ মুখে আপনার জীবনকাহিনী এইরূপ ব্যক্ত করিয়াছেনঃ—নীচ কুলে আমার জন্ম, আমি দীন দরিদ্র ছিলাম, আমার ব্যবসায়ও অতি নীচ ছিল। লোকে আমাকে অবজ্ঞা করিত। আমি অবনত-