পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের সার্ব্বভৌমিকতা

করে, যে ঋণগ্রস্ত হইয়া সেই ঋণ অস্বীকার করে, যে অর্থলোভে অন্যের জীবন নাশ করে, যে ব্যভিচার করে, সেই ব্যক্তি চণ্ডাল।”

 “যে অতীত যৌবন ও জরাক্লিষ্ট জনক জননীর সেবা করে না, বাক্যবাণে স্বজনদিগকে জ্বালাতন করে, সেই ব্যক্তি চণ্ডাল।”

 “লোকে ভাল পরামর্শ চাহিতে আসিলে, যে মন্দ পরামর্শ দেয়, সত্য গোপন করিয়া যে মিথ্যা বলে, সেই ব্যক্তি চণ্ডালের প্রধান।”

 “যে ব্যক্তি অহঙ্কারে মত্ত হইয়া আপন মুখে আপনার প্রশংসা করে, ঘৃণাপূর্ব্বক অন্যকে নিন্দা করে, সেই ব্যক্তি চণ্ডাল।”

 সাধুশীল শ্বপচও ইহলোকে এবং পরলোকে কিরূপ সুখশান্তি লাভ করে, বুদ্ধদেব তাহা দৃষ্টান্তদ্বারা ব্যাখ্যা করিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন—“মাতঙ্গ নামক এক চণ্ডালনন্দন কামক্রোধাদি বিসর্জ্জন করিয়া পরম সাধু হইয়াছিলেন। তাঁহার অনন্য-সুলভ যশ সর্ব্বত্র পরিব্যাপ্ত হওয়ায় দলে দলে ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় আসিয়া তাঁহাকে বন্দনা করিত। মৃত্যুর পরে তিনি মহানন্দে ব্রহ্মলোকে গমন করিয়াছিলেন। পক্ষান্তরে অধ্যাপককুলজাত এক ব্রাহ্মণনন্দন বেদমন্ত্রে সুশিক্ষিত হইয়াও পাপাচারী হইয়াছিল। সে ইহলোকে কদাচ শান্তি লাভ করে নাই, পরলোকেও নিরয়গামী হইয়াছিল। কুল ও বেদজ্ঞান তাহাকে পতন হইতে রক্ষা করিতে পারে নাই।

 বুদ্ধের জ্ঞানগর্ভ সরল বাণী অগ্নিভরদ্বাজের হৃদয় স্পর্শ করিয়াছিল, তিনি জাতিগোত্রের অভিমান ত্যাগ করিয়া তাঁহার শিষ্য হইলেন।

 সমাজ যাহাদিগকে পতিত বলিয়া উপেক্ষা করিত, বুদ্ধদেব কদাচ, তাহাদিগকে পতিত বলিয়া উপেক্ষা করেন নাই। তিনি সকলের

৭৫