পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের জীবন ও বাণী

 বুদ্ধ মানবকে কোনো ব্যর্থ আশা না দিয়া, খোলাখুলি বলিয়া দিলেন—“ত্বম্‌হেহি কিচ্চং আতপ্পং”, অর্থাৎ তোমার নিজেকেই উদ্যমের সহিত মঙ্গল আচরণ করিতে হইবে, তোমাকেই আষ্টাঙ্গিক সাধুপথ ধরিয়া চলিতে হইবে, তোমাকেই ধ্যানপরায়ণ হইয়া মুক্তিলাভ করিতে হইবে,আমি কেবল পথের পরিচয় দিতে পারি মাত্র। তোমাকে জাগরিত হইতে হইবে; তুমি আলস্যপরায়ণ হইলে চলিবে না। তোমার চিত্তকে ও সঙ্কল্পকে জাগাইয়া তোল, কারণ “কুসীদপঞ্‌ঞায় মগ্‌গং অলসো ন বিন্দতি” অর্থাৎ নির্বীর্য্য ও অলস ব্যক্তি জ্ঞানপথ লাভ করিতে পারে না।

 বুদ্ধ বলিলেন—তুমি বাক্যে ও মনে সংযত হও, শরীর দ্বারা কোনো পাপ করিও না; এইরূপ করিলে দেহে বাক্যে ও মনে পবিত্র হইয়া তুমি ধর্ম্মপথে বিচরণ করিতে পারিবে। পাপাভিলাষ হইতে তুমি তোমার চিত্তকে উদ্ধার কর। মহান্‌ জলপ্রবাহ যেমন সুপ্ত গ্রাম ভাসাইয়া লইয়া যায়, পাপপ্রমত্ত ব্যক্তিকে মৃত্যু তেমন করিয়া নিজ অধিকারে লইয়া যায়।

 হে নির্ব্বাণকামী মানব, ধর্ম্মকে তোমার বিচরণের প্রমোদকানন কর, ধর্ম্মকে তোমার আনন্দ কর, ধর্ম্মে তোমার প্রতিষ্ঠান হউক, ধর্ম্মই তোমার জ্ঞাতব্য বিষয় হউক; যাহাতে ধর্ম্ম ম্লান হইতে পারে এমন কোনো বিতণ্ডা তোমার মনে স্থান দিও না এবং সুভাষিত সত্যালোচনায় তোমার সময় অতিবাহিত হউক।

 হে নির্ব্বাণপথের যাত্রী, তুমি স্থিরধী ও সুপণ্ডিত সাধুর সঙ্গ কর। সুদক্ষ নাবিক যেমন অরিত্রযুক্ত দৃঢ় নৌকায় করিয়া বহু ব্যক্তিকে তাহার পরিজ্ঞাত পথ দিয়া স্থানান্তরে লইয়া যাইতে পারে,

৮০