বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বৌদ্ধনীতি

করিয়া, যদি আমরা মনে মনে পাপানুধ্যানে নিরত থাকি, তাহা হইলে আমরা কেমন করিয়া সত্যলাভের আশা করিতে পারি? সত্য বল, ধর্ম্ম বল সকলি মনের ব্যাপার। ধম্মপদে উক্ত হইয়াছে,—ধর্ম্ম মন হইতেই উৎপন্ন হয়। আমাদের বাক্যকে, আমাদের কার্য্যকে মনের নির্ম্মলতা দ্বারা আচ্ছন্ন করিতে হইবে।

মনসা চে পসন্নেন ভাসতি বা করোতি বা।
ততো নং সুখমন্বেতি ছায়া ব অনপায়িনী॥

যদি কেহ নির্ম্মলান্তঃকরণে কথা কহেন কিংবা কার্য্য করেন, তবে সুখ তাঁহাকে সর্ব্বদা ছায়ার ন্যায় অনুসরণ করে।

 আবার অন্য পক্ষে বলা হইয়াছেঃ—

মনসা চে পদুট্‌ঠেন ভাসতি বা করোতি বা।
ততো নং দুক্‌খমন্বেতি চক্কং চ বহতো পদং॥

যদি কেহ দূষিত মনে কথা কহে বা কার্য্য করে, তবে চক্র যেমন ভারবাহী বলীবর্দ্দের পদাঙ্ক অনুসরণ করে, দুঃখও তাহাকে সেইরূপ অনুসরণ করে।

 যিনি সুখার্থী, যিনি ধর্ম্মার্থী, তাঁহাকে যেমন করিয়া হউক্, নিজের মনকে স্ববশে আনিতে হইবে এবং মনটিকে সর্ব্ববিধ মলিনতা হইতে মুক্ত করিয়া শুদ্ধ ও তেজস্বী করিতে হইবে। এইজন্যই বুদ্ধদেব বিশ্বাসীদিগকে শীল গ্রহণ করিতে বলিয়াছেন। বৌদ্ধ সাধনায় শীলই নির্ব্বাণের পাথেয়। শীলগুলি চরিত্রকে বলিষ্ঠ করে এবং চরিত্রকে গড়িয়া তোলে। সুতরাং, সাধনার পথে অগ্রসর হইবার সম্বলই শীল। “সুখং যাব জরা সীলং”—বার্দ্ধক্যপর্য্যন্ত শীলপালন সুখকর।

৮৩