পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের জীবন ও বাণী

গোচর হইবে; তখনই কর্ম্মই তোমাকে প্রভু বলিয়া মানিয়া লইবে। কর্ম্মের শক্তি তোমার বর্ত্তমান ও ভবিষ্যতের যোগ-সেতু। তৃষ্ণার ক্ষয় হইলেই এই যোগ-সেতু ভাঙ্গিয়া যায়, নির্ব্বাণলাভ হয় এবং নব জন্মলাভের আর সম্ভাবনা থাকে না। পুনঃপুনঃ জন্মলাভের যাহা হেতু বা কারণ তাহার উপরম হইলেই, আর জন্ম গ্রহণ করিতে হয় না। কর্ষণ ও বপন না করিলে যেমন শস্যসংগ্রহের সম্ভাবনা দূর হয়, আসক্তি বা বাসনার ক্ষয় হইলেই তেমনই জন্মলাভের সম্ভাবনা দূর হয়। বৌদ্ধেরা বলেন, ঘরে প্রদীপ জ্বালিবামাত্র যেমন অন্ধকার দূরীভূত হয় এবং সকল দ্রব্য প্রত্যক্ষগোচর হয়, তেমনি সাধক প্রজ্ঞা লাভ করিবামাত্র তাহার হৃদয়ের অবিদ্যার অন্ধকার দূর হয় এবং চতুরার্যসত্য তাহার জ্ঞানগম্য হইয়া যায়। তখন তাহার স্থির-প্রজ্ঞা একদিক হইতে মনকে দৃঢ়বলে আঁকড়িয়া ধরে এবং অন্যদিক হইতে তৃষ্ণার মূলচ্ছেদন করে। তাহার তৃষ্ণা বিনষ্ট হইবামাত্র, জন্মজন্মান্তরের কর্ম্মসূত্র ছিন্ন হইয়া যায়। ইহা অনায়াসেই বুঝা যাইতে পারে যে, আমাদের শারীরিক, মানসিক ও বাচনিক ভালমন্দ যাহা কিছু কার্য্য, সমস্তই আমরা ভিতর হইতে তাগিদ পাইয়া করিয়া থাকি। কর্ম্ম আমাদিগকে করিতেই হয় এবং তাহার পরিণামও অবশ্যম্ভাবী। উর্দ্ধক্ষিপ্ত প্রস্তরখণ্ড যেমন ভূপৃষ্ঠে পড়িবেই, শুভাশুভ কর্ম্ম তেমনই নব নব সংস্কারের জন্মদান করিবেই। ধম্মপদে উক্ত হইয়াছে—চিরপ্রবাসী নির্ব্বিঘ্নে প্রত্যাগত হইলে আত্মীয়-বন্ধুরা যেমন তাহাকে স্বাগত বলিয়া অভ্যর্থনা করে, ইহলোক হইতে অপসৃত হইবার পরও মানবের পুণ্যকর্ম্ম তেমনি তাহাকে বন্ধুর ন্যায় প্রতি-

১০৪