মহাপ্রভু চৈতন্য সেই প্রেমসম্বন্ধ সাধন করিয়া গেলেন। বৈষ্ণবগণ সেই রস হাতের কাছে পাইয়া বাঁচিয়া গেলেন।
তাই বলিতেছিলাম, মহাপুরুষেরা নির্জ্জীব সত্যগুলিকে ধরিয়া সাধনা দ্বারা জীবন্ত করিয়া দেন, তখন সত্য আমাদের জিজ্ঞাস্য মাত্র থাকে না, তাহা আমাদের অন্তরের খাদ্য এবং প্রাণের আশ্রয় হইয়া উঠে।
এই পন্থায় বিপদও আছে। জগতে কোন্ মহামূল্য নিধি বিনামূল্যে মানুষ লাভ করিয়াছে? ইহারও মূল্য দিতে হয়, বড় বিষম মূল্য দিতে হয়। যত দিন জ্ঞান নির্জ্জীব থাকে তত দিন তাহা পচে না কিন্তু যেই তাহা জীবন্ত হইয়া উঠে, তখনি তাহা জীবন্ত বস্তুর ন্যায় প্রাণহীন হইলেই পচিতে আরম্ভ করে। ধর্ম্মের এই রূপ বিকারে জগতে যত রক্তারক্তি ও মহা অনর্থপাত ঘটিয়াছে ততকি নীচতম স্বার্থসাধন করিতে গিয়াও ঘটিয়াছে? কত হত্যা, কত দাহ, কত অত্যাচার, কত নিষ্ঠুরতা, কত কুসংস্কার, কত নির্য্যাতন! বড় কঠিন মূল্যে জীবন্ত সত্যকে গ্রহণ করিতে হয়।
কিন্তু উপায় নাই, এই ভাবেই জীবন্ত সত্যগুলিকে মানব এ যাবৎ গ্রহণ করিয়াছে এবং এই বিপদ বাদ দিয়া সাধনাকে গ্রহণ করিবার উপায় আজও উদ্ভাবিত হয় নাই। যাঁহারা অতিশয় সাবধান হইতে গিয়াছেন তাঁহাদের সুচতুর নানা বন্ধনেই সত্যের প্রাণ উড়িয়া গিয়াছে। সত্য জীবন্ত হইবে অথচ বিপদ থাকিবে না এমন উপায় আছে কোথায়? তাহার একমাত্র উপায় আছে যাহা সর্ব্বাপেক্ষা সরল ও সর্ব্বাপেক্ষা উদার কিন্তু সেই জন্যই অতিশয় কঠিন। সেই উপায় সদা প্রাণবান্ থাকা। আচারে